জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতা গত মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) হঠাৎ কক্সবাজার সফরে গেলে রাজনৈতিক অঙ্গনে দেখা দেয় নানা প্রশ্ন। জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তির দিনে এই সফরকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। এনসিপির রাজনৈতিক পর্ষদ বা শীর্ষ নেতাদের অবহিত না করেই এই সফর করায় সংশ্লিষ্ট পাঁচ নেতার কাছে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত। তাঁর স্বাক্ষরিত পাঁচটি পৃথক চিঠিতে এই নোটিশ পাঠানো হয়। বুধবার (৬ আগস্ট) সংশ্লিষ্ট নেতাদের কাছে এ চিঠিগুলো পৌঁছানো হয়। চিঠিগুলো পরে দলটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও প্রকাশ করা হয়।
কারণ দর্শানো নোটিশ প্রাপ্ত নেতারা হলেন:
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস ও ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর বার্ষিকীর দিনে তারা ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজার গিয়েছেন। অথচ এই সফরের কোনো তথ্য বা ব্যাখ্যা রাজনৈতিক পর্ষদ কিংবা দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে জানানো হয়নি। দলীয় শৃঙ্খলা বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা চেয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাঁচ নেতা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর তাঁরা উখিয়ার ইনানী সৈকতের পাঁচ তারকা হোটেল ‘সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা’-তে (পূর্বতন রয়েল টিউলিপ) অবস্থান নেন।
এই সফর ঘিরে রাজনৈতিক মহলে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ দাবি করেন, ওইদিন পাঁচ নেতা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যদিও গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পিটার হাস বর্তমানে বাংলাদেশে নেই, তিনি ওয়াশিংটনেই অবস্থান করছেন।
এনসিপির কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা মনে করছেন, এমন সফর বার্ষিকীর দিন হওয়ায় দলের ভেতরে ভুল বার্তা যেতে পারে। তাছাড়া, রাজনৈতিক সমন্বয়হীনতার বিষয়টিও সামনে চলে আসে, যা দলের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
দলটির পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই পাঁচ নেতার ব্যাখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। তবে সূত্র জানায়, ব্যাখ্যার পরবর্তী পদক্ষেপ বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।