রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ৭ আগস্ট, ২০২৫, ০২:৩৮ পিএম | প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫, ০১:৪০ পিএম
রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক

সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংক্রান্ত মামলার রায় জালিয়াতি ও বেআইনি রায় প্রদানের অভিযোগে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামান এ আদেশ দেন।

সেদিন তাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক খালেক মিয়া জানান, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় খায়রুল হককে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তার কাছ থেকে মামলার ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। যদিও তিনি আদালতে কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে রাখা প্রয়োজন বলে আদালতের কাছে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে আদালত তার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে গত ৩০ জুলাই ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ তার বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তারও আগে, ২৪ জুলাই ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ওই দিনই যাত্রাবাড়ী থানার কিশোর আব্দুল কাইয়ূম আহাদ হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার মূল অভিযোগ ওঠে গত বছরের ২৭ আগস্ট, যখন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহা. মুজাহিদুল ইসলাম শাহবাগ থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে দণ্ডবিধির ২১৯ ও ৪৬৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে খায়রুল হক ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে যে সংক্ষিপ্ত আদেশ দিয়েছিলেন, সেটিকে পরে অবৈধভাবে পরিবর্তন করে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পুরোপুরি ভিন্নধর্মী একটি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন। এতে বলা হয়, তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছা পূরণ এবং অবসরোত্তর সুবিধাজনক পদায়নের আশায় এমন রায় প্রদান করেন। তদন্ত কর্মকর্তার ভাষ্যে, এসব অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে খায়রুল হকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে।

আইনজীবীদের মতে, একজন সাবেক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এ ধরনের গুরুতর অভিযোগ দেশের বিচার বিভাগের জন্য একটি নজিরবিহীন ঘটনা। বিষয়টি শুধু বিচারিক নৈতিকতার প্রশ্নই তোলে না, বরং দেশের আইনি কাঠামোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে