নীলফামারীর সৈয়দপুরে দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থার কারণে যানজট পিছু ছাড়ছে না। তীব্র যানজটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। একটানা ঘন্টার পর ঘন্টা শহরে লেগে থাকছে যানজট। যানজট নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষ নানান উদ্যোগ নিলেও তা কোন কাজে আসছে না। এদিকে স্বল্প সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ আপ্রান চেষ্টা করেও যানজট নিরসনে ব্যর্থ হচ্ছে।
দিনে ও রাতে সমান তালে লেগে থাকে যানজট। এ সময় মানুষ পায়ে হেঁটে এক পাশ থেকে অন্য পাশে যেতেও পারে না।
সৈয়দপুর থানার সামন থেকে পাঁচমাথা মোড়।সোহেল রানা মোড় থেকে রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়। মদিনা মোড় থেকে দিনাজপুর রোড সোনালী ব্যাংক। এ সকল রাস্তা থাকছে যানজটের কবলে।
এ সময় জরুরী কাজে লোকজন আটকা পড়ে সড়কে। রোগীর গাড়ী যানজটের কবলে পড়ে ঘটতে পারে প্রানহানি।
শত চেষ্টা করেও যানজট নিরসন করতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। ফলে যানজটের ওই সময় মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হন।
অটো চালক আলম জানায়,যানজটের কারণে এ শহরে অটো চালাতে মন চায় না। ১০ টাকার ভাড়ার যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যেতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
মোটর সাইকেল চালক জাহিদুল ইসলাম খান বলেন,এখন মোটর সাইকেল নিয়ে আর শহরে আসতে মন চায় না। যানজটে পড়ে সড়কে থাকতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা।
সৈয়দপুর ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বেসরকারি হাসপাতাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাকিফুল ইসলাম জানান, যানজট কোন ক্রমেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন,গুরুতর রোগী নিয়ে রংপুর হাসপাতালে নির্দিষ্ট সময়ে পৌছা যায় না।
সৈয়দপুর পৌরসভার এক কর্মকর্তা জানান, ছোট শহরে হালকা এবং ভারী যানবাহন চলাচল করে।
তাছাড়া এ শহরে অসংখ্য রিক্সা,অটো,ইজিবাইকসহ অন্যান্য যানবাহল চলাচল করে। এদের অনেক যানবাহন মালিক পৌরসভার লাইসেন্স না করেই তাদের গাড়ী সড়কে চলাচল করে। ফলে শহরে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে।
সৈয়দপুর ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক (টিআই) আমিনুল ইসলাম বলেন,আসলেই শহরে যানবাহনের চাপ অনেক বেশি। কারণ সড়ক প্রশস্ত নয়,তাছাড়া ফুটপাত দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না। মোড়গুলো বিস্তৃত নয়। তবুও আমরা জনবল সঙ্কটেও আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যানজট নিরসন করতে।
সৈয়দপুর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলতাফ হোসেন বলেন,শহরে অনেক যানবাহন চলে। এর কারণে লেগে যায় যানজট। তাছাড়া সৈয়দপুর থেকে ৮টি ট্রেন চলাচল করে। এ সময় তো সড়ক থাকে অটোর দখলে।
সৈয়দপুর শহরে যানজটের অন্যতম কারণ হলো ব্যবসায়িরা সড়কের সাথে অথবা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছেন। শুধু মাত্র, যানজটের কারণেই বিমানের যাত্রীরা ফ্লাইট মিস করেন। এমনকি দমকল বাহিনীর গাড়ি আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে যেতে পারছেন না সময় মতো। স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীরাও যানজটের কারণে চরম বিপাকে পড়ছেন।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌরসভার প্রশাসক নুর-ই আলম সিদ্দিকী যানজটের কথা স্বীকার করে বলেন, দিনের বেলা ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ করা হয়েছে। এসব নিষেধাজ্ঞা মানতে চায় না চালকরা। যানজট নিয়ে উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও পুলিশ প্রশাসনের সভা করা হয়েছে। অতি দ্রুত যানজটের দুর্ভোগ থেকে শহরবাসি রক্ষা পাবেন।