বাড়ি ও জমি বিক্রির বায়না দলিল করেও রেজিস্ট্রিতে প্রতারণার দায়ে

তানোরে বণিক সমিতির সভাপতির স্ত্রীর নামে আদালতে চুক্তি প্রবলের মামলা

মো: ইমরান হোসাইন; তানোর, রাজশাহী | প্রকাশ: ১০ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৫৪ এএম
তানোরে বণিক সমিতির সভাপতির স্ত্রীর নামে আদালতে চুক্তি প্রবলের মামলা
রাজশাহীর তানোরে বাড়ি ও জমি বিক্রির বায়না দলিল করেও রেজিস্ট্রিতে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় রাজশাহীর সদর সহকারী বিজ্ঞ জজ আদালতে চুক্তি প্রবলের মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নম্বর- ১৫২/২৫ অন্যপ্রকার। সম্প্রতি ৪ আগস্ট মামলাটি করেন ভুক্তভোগি মনোয়ার হোসেন বাবু নামের এক আইনজীবি। তার বাড়ি তানোর সদর গাইনপাড়া মহল্লায়। পিতার নাম ওছিমুদ্দিন মন্ডল। তিনি রাজশাহী জজকোর্টের আইনজীবি মাসুদ রানার মাধ্যমে মামলাটি দায়ের করেছেন। পরে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর বিবাদী ফাতেমা বেগম (৪৫) কে স্বশরীরে হাজির হবার আদেশ প্রদান করেছেন। মামলার এজাহার ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তানোর সদরের গোল্লাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম (৪৫) তার নামীয় তানোর কলেজের দক্ষিণে তানোর মৌজায় দশমিক ০৪১৩ একর জমি ১৮ লক্ষ টাকায় বিক্রয় করবার জন্য রেজিস্ট্রি বায়না চুক্তি সম্পাদন করেন। এরমধ্যে রেজিস্ট্রির দিন নগদ ৮ লক্ষ টাকা নেন। বাঁকি ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে ৩ মাসের মধ্যে জমি ও বাড়ি রেজিস্ট্রি দেবেন মর্মে গত ১৯ মে বায়না চুক্তি দলিল রেজিস্ট্রি সম্পাদন করে দেন তিনি। ওই নারী তানোর থানামোড় আদর্শ বণিক সমিতির সভাপতি কবিরুল আলম কবিরের স্ত্রী। এমন বায়না রেজিস্ট্রি সম্পাদন করেও জমি আর বাড়ি রেজিস্ট্রি না দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় গত ৭ জুলাই রাজশাহী জজকোর্টের আইনজীবি মাসুদ রানার মাধ্যমে ডাকযোগে এ্যাডভোকেট বাবু লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। কিন্তু নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনেও জমি রেজিস্ট্রি দেননি প্রতারক ফাতেমা বেগম। নিরুপাই হয়ে এ্যাডভোকেট বাবু সম্প্রতি ৪ আগস্ট চুক্তি প্রবলের মামলা দায়ের করেছেন। যার প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর বিবাদী ফাতেমা বেগমকে স্বশরীরে হাজির হবার আদেশ প্রদান করেছেন। এবিষয়ে এ্যাডভোকেট মনোয়ার হোসেন বাবু বলেন, ওই জমির স্থাপনার (বাড়ি) মূল্য ৩ লক্ষ টাকা। আর জমির মূল্য ১৫ লক্ষ টাকা ধরা হয়। যার দৈর্ঘ্য ২০ ফিট ও প্রস্থ ১০ ফিট। টোটাল ২০০ স্কয়ার ফিট। তিনি ওই জমি ও বাড়ি রেজিস্ট্রি বায়না চুক্তির পর কমমূল্যে তার বিভিন্ন সম্পদ বন্দক রেখেছেন। তাছাড়াও ধার দেনা করে এতো টাকা জোগাড় করেছেন। এখন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমি রেজিস্ট্রি দিতে বিভিন্ন টালবাহনা করছেন কবির ও তার স্ত্রী। এজন্য সরকারি বিধি মোতাবেক জমি রেজিস্ট্রি পাবার জন্য সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ আদালতে নির্ধারিত কোর্ট ফি জমা দিয়ে চুক্তি প্রবলের মামলা করেছেন তিনি। তবে, ফাতেমা বেগম ও কবিরুল আলম বলেন- পাড়ার লোকজন ও আত্নীয়-স্বজন বাড়ি বিক্রি না করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। তাছাড়া বাড়িসহ জমি রেজিস্ট্রি দিলে তারা থাকবেন কোথায়। আর মূল কথা বাড়ি বিক্রির বায়নার টাকা খরচ হয়ে গেছে। তাদের বাড়ি বিক্রির নামে বায়না চুক্তি করে টাকা নেয়া ভুল হয়ে গেছে। হাতে টাকা পেলে ফেবৎ দেব। আদালতে মামলা হলে জবাব দেব বলে এড়িয়ে গেছেন এই প্রতারক দম্পত্তি। এব্যাপারে রাজশাহী জজকোর্টের এ্যাডভোকেট মাসুদ রানা বলেন, চুক্তি সম্পাদনকারী ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাড়ি আর জমি রেজিস্ট্রি না দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করে তার মক্কেল বিশিষ্ট আইনজীবি বাবুকে হয়রানির কবলে ফেলেছেন। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ আদালতে চুক্তি প্রবলের মামলা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতারণার দায়ে পৃথক আরেকটি মামলা দুয়েক দিনের মধ্যে দায়ের করে আদালতের নির্দেশে বাড়িসহ জমি উদ্ধার করা হবে বলে নিশ্চিত করেন এই এ্যাডভোকেট। ই/তা
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে