গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা: ময়নাতদন্তে মিললো ৯টি গভীর ক্ষতের প্রমাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১১ আগস্ট, ২০২৫, ০৮:৩৯ পিএম
গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা: ময়নাতদন্তে মিললো ৯টি গভীর ক্ষতের প্রমাণ

গাজীপুরের ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ চিত্র। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তুহিনের গলা, ঘাড়, বুক, পিঠ ও হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মোট নয়টি গভীর ও গুরুতর ক্ষত পাওয়া গেছে।

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ শনিবার (৯ আগস্ট) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। সহকারী অধ্যাপক এ এন এম আল মামুন জানান, আঘাতগুলো আকারে ছোট-বড় হলেও প্রতিটি ছিল সমান গুরুতর ও গভীর। এই প্রতিবেদন রোববার (১০ আগস্ট) রাতে পুলিশের হাতে পৌঁছায়।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে আদালতকে হত্যার ধরন, অস্ত্রের প্রকার এবং আঘাতের প্রকৃতি জানানো হবে। এরপর পুলিশের দায়িত্ব হবে প্রমাণ করা—কীভাবে, কখন, কারা এবং কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিলের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান।

৩৮ বছর বয়সী সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ–এর গাজীপুর প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার ভাটিপাড়া গ্রামের হাসান জামালের ছেলে এবং স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গাজীপুর শহরে বসবাস করতেন। গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ভিডিও ধারণের সময় তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়।

পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন—ফয়সাল ওরফে কেটু মিজান (যাকে হত্যার মূল হোতা বলা হচ্ছে), তার স্ত্রী গোলাপী, সুমন, আল আমিন, স্বাধীন, মো. শাহ জালাল, শহীদুল ইসলাম এবং মো. ফয়সাল হাসান। এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে—একটি নিহতের বড় ভাই মো. সেলিমের করা, অন্যটি হত্যার আগে সংগঠিত একটি হামলার ঘটনায় আহত বাদশা মিয়ার ভাইয়ের করা।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকালে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তুহিনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ময়মনসিংহের গ্রামের বাড়িতে, যেখানে দাফন সম্পন্ন হয়।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে