কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিএনপিতে চার মনোনয়ন প্রত্যাশী

এফএনএস (মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম সিদ্দিক; চিলমারী, কুড়িগ্রাম) : | প্রকাশ: ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ০৪:৫১ পিএম
কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিএনপিতে চার মনোনয়ন প্রত্যাশী

কুড়িগ্রাম-৪ আসনটি চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। ত্রয়োদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থীসহ জামায়াতের প্রার্থী নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জামায়াতের প্রার্থী ছয় মাস আগে নির্ধারিত হলেও বিএনপি’র প্রার্থী নির্ধারিত না হওয়ায় চার জন প্রার্থী গণসংযোগ করছেন। এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি, খেলাফত মজলিস ও গণঅধিকার পরিষদের কোন তৎপরতা দেখা যায়নি এখন পর্যন্ত।  ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন একটি উপজেলা চিলমারী নদের পশ্চিম তীরে অপর দুইটি উপজেলা রৌমারী ও রাজিবপুর পূর্ব দিকে অবস্থিত। প্রার্থীরা এলাকায়ঢ নিজেদের প্রার্থীতার কথা জানান দিতে গণসংযোগ, সভা ও সমাবেশ করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আওয়ামী লীগের কর্মকান্ড নিষিদ্ধ হওয়ায় তাদের নেই কোন নির্বাচনী তৎপরতা। এ আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা হলো তিন লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার। চিলমারী উপজেলায় ০১ লক্ষ, রৌমারী উপজেলায় ০১ লক্ষ ৯০ হাজার আর রাজিবপুর উপজেলায় ৬৫ হাজার ভোটার রয়েছে। এই আসনটিতে ১৯৯১ সালে জাতীয় পার্টি থেকে মোঃ গোলাম হোসেন (এরশাদ), ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে মোঃ গোলাম হোসেন (এরশাদ), ২০০১ সালে জাতীয় পার্টি থেকে গোলাম হাবিব দুলাল (এরশাদ), ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মোঃ জাকির হোসেন, ২০১৪ সালে জেপি থেকে রুহুল আমিন (আনোয়ার হোসেন মঞ্জু), ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মোঃ জাকির হোসেন (সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী), ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মোঃ বিপ্লব হাসান পলাশ, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ছাত্র জনতার গণঅভ্যূত্থানে গত ০৫ আগস্ট, ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের পতন হয়। জামায়াতের ইসলামীর প্রার্থী আগে ঘোষণা করায় প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন বেশ সরবে। বর্তমানে মাঠে বিএনপি’র চারজন প্রার্থী পাড়া মহল্লায় সম্ভাব্য প্রার্থি হিসেবে জনসংযোগ ও ৩১ দফা বাস্তাবায়নের লিফলেট বিতরণ করছেন। কেউ কেউ আবার উঠান বৈঠিক ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আগাম ভোট প্রার্থণা করছেন। রৌমারী উপজেলা সাবেক আমির মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী। বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, চিলমারী উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল বারী সরকার, রৌমারী উপজেলার সাবেক বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলহাজ্ব আজিজুর রহমান, জাতীয়তাবাদী মহিলাদলের কেন্দ্রিয় কমিটির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও রৌমারী উপজেলা বিএনপির সহসভাপিত মোছাঃ মমতাজ হোসেন লিপি এবং রাজিবুপর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান এই চারজন প্রার্থী এলাকায় মিটিং মিছিলসহ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ আজিজুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে দল আমাকে মনোনয়ন দেয়, কিন্তু তখন কারচুপির মাধ্যমে আমার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তারপরও আমি ৫৬ হাজার ভোট পাই। দল এবারও মনোনয়ন দিবে বলে মনে করেন তিনি। বিএনপি নেতা মোঃ মোখলেছুর রহমান বলেন, ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং বর্তমানে চর রাজিবপুর উপজেলার আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক হওয়ার পর থেকে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় আছি ও বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেছি। আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। মোছাঃ মমতাজ হোসেন লিপি তিনি সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক কেন্দ্রিয় কমিটি, সহ-সভাপতি রৌমারী উপজেলা বিএনপি ১নং সদস্য জাতীয়তাবদী মহিলাদল কুড়িগ্রাম। তিনি বলেন, আবার বাবা গোলাম হোসেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাটপতি ছিলেন রৌমারী উপজেলার এবং তিনি দুইবার কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৭৯ সালে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে মাত্র ৪০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। আমি এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে গণসংযোগ, সভা ও সমাবেশসহ উঠান  বৈঠক যথারীতি করছি, এতে জনগনের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি, আসা করি দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি জয়লাভ করবো এবং জয়লাভ করলে চিলমারী, রৌমারী-রাজিবপুরকে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করব। সাবেক চিলমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল বারী সরকার বলেন, তিনি মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে কর্মসংস্থানে সৃষ্টি করা শিক্ষা মান উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবা, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন করবো। তিনিও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। জামায়াতের ইসলামীর একক প্রার্থী হওয়ায় বর্তমানে তিনি সুবিধা জনক অবস্থানে রয়েছেন। মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, আমি নির্বাচিত হলে, বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার হবে। রৌমারী, চিলমারী ও রাজিবপুর উপজেলায় সবহারে উন্নয়ন হবে। জয়ের ব্যাপারী তিনি শতভাগ আশাবাদী। কুড়িগ্রাম-৪ আসনে আগামী ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিএনপি এবং জামায়াতের ইসলামীর প্রার্থির মধ্যে হাড্ডা হাড্ডির লড়াইয়ের সম্ভবনা রয়েছে। তবে এ আসনে ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, এবি পার্টি, এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের নির্বাচনী কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে