টানা পতনের ধাক্কা কাটিয়ে দেশের শেয়ারবাজার আবারও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। টানা সাত কার্যদিবসের পতনের পর দ্বিতীয় দিনেও সূচক ও লেনদেন বেড়েছে দুই বাজারেই। বিনিয়োগকারীদের আস্থায় নতুন করে সাড়া দিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারের দাপট, যা অন্যান্য খাতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১ পয়েন্ট যোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪০১ পয়েন্টে। আগের কার্যদিবসেও সূচক বেড়েছিল ৩৬ পয়েন্ট। এর আগে টানা সাত কার্যদিবসে সূচক কমেছিল ২২২ পয়েন্ট।
লেনদেনের দিক থেকেও ডিএসইতে বড় উত্থান লক্ষ্য করা গেছে। এদিন বাজারটিতে ৮০১ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৯৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বা প্রায় ১৪ শতাংশ বেশি। এ লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ব্যাংক খাত। তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ২৮টির শেয়ারদর বেড়েছে। পাশাপাশি আর্থিক খাতের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪টির শেয়ারদর বেড়ে বাজারে গতি ফিরিয়ে এনেছে।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল সিটি ব্যাংক, যার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকার। এরপর রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (২৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা) এবং ওরিয়ন ইনফিউশন (২৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা)। শীর্ষ দশ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরও ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, মালেক স্পিনিং, যমুনা ব্যাংক, মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং ও সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল।
এদিন ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ২০৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বেড়েছে, ১৩৫টির কমেছে এবং ৫৮টির অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২২টির। মাঝারি লভ্যাংশ দেওয়া ৫২ কোম্পানির শেয়ারও ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এমনকি লভ্যাংশ না দেওয়া ‘জেড’ গ্রুপের মধ্যেও ৩১ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২৪ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৯৭ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকার, যা আগের কার্যদিবসের তুলনায় তিনগুণেরও বেশি। অংশগ্রহণকারী ১৭৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৮টির শেয়ারদর বেড়েছে, ৬৪টির কমেছে এবং ২১টির অপরিবর্তিত রয়েছে।
টানা পতনের পর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসায় শেয়ারবাজারে নতুন করে গতি সঞ্চার হয়েছে বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। বিশেষ করে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারের শক্তিশালী অবস্থান বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।