রংপুরের পীরগাছায় এক যুবলীগ নেতার কাছে অবৈধ ভাবে দখলে থাকা ৮৮ শতাংশ জমি দীর্ঘ ৮ বছর পর ফিরে পেলেন জমির মূল মালিক ও ওয়ারিশগণ। সোমবার তাম্বুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতের রায়ের পর জমিটির দখল বুঝে নেয় মালিক পক্ষ। এসময় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, গ্রামবাসী, বাদি ও বিবাদীর লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এদিকে কোন কাগজপত্র ছাড়াই ক্ষমতার জোরে জমি জবরদখলকারী ওই যুবলীগ নেতা আব্দুর রহিমকে গ্রেফতারের দাবি জানান সচেতন নাগরিক সমাজ।
জানা গেছে, উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের আরাজি দেবু গ্রামের মৃত সরিয়ত আলী খাঁ ও আয়মন নেছার নামে ৪০ সালের রেকর্ডমূলে থাকা ৮৮ শতাংশ জমি ৬২ সালের ভূল নামে রেকর্ডভূক্ত। এরপর ৯২ সালের রেকর্ডে অটো ভাবে আবারো ৪০ এর মূল মালিকের নামে রেকর্ড করণ করা হয়। এর মাঝে ২০১৭ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তাম্বুলপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহিম গং প্রভাব খাটিয়ে দলীয় নেতাদের দিয়ে মনগড়া একটি শালিসী বৈঠকের রায়ে ওই ৮৮ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখলে নেন। এসময় তারা কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারলেও মূল মালিক পক্ষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জমিটি ভোগদখল করতে থাকে। ইতিমধ্যে ওই জমির মামলা করে নিজ পক্ষে রায় থাকা, ৯২ সালে রেকর্ড, খারিজ-খাজনা সব পরিশোধ করেও জমিটি ফেরত পাননি মূল মালিকপক্ষ। অবশেষে তাম্বুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। এ নিয়ে বেশ কয়েক বার শালিসী বৈঠক বসলেও ওই যুবলীগ নেতা আব্দুর রহিম গং কোন কাগজপত্র কিংবা রেকর্ড সংশোধনের কোন মামলা দায়ের করেননি। তারা শালিসী বৈঠকে উপস্থিত না থেকে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। সোমবার আবারো শালিসী বৈঠকে বাদি পক্ষে কাগজপত্র পর্যালোচনা করা হলেও বিবাদী পক্ষের কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় গ্রাম আদালতের বিচারক ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ মুকুল স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সম্মুখে রায় প্রদান করেন। রায়ে জহির খাঁ গংয়ের নিকট জমি ছেড়ে দিতে বলা হয়। পরে শতাধিক গ্রামবাসী ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় মূল মালিকপক্ষ জমিটি নিজ দখলে বুঝে নেন।
গ্রামবাসী জানান, কাগজপত্র কিছুই নাই। কত দিন গায়ের জোরে চলে। আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে তারা জমিটি ভোগদখল করেছে। এখন মূল মালিক জমি বুঝে পেলো।
জমির মালিক লিটন খাঁ গং বলেন, ক্ষমতা সব সময় থাকে না। আমাদের সব কাগজপত্র, রেকর্ড, খাজনা-খারিজের নথি থাকলেও তারা জমিটি ছেড়ে দেয়নি। এখন গ্রাম আদালতের রায়ে আমরা জমি বুঝে নিয়েছি। আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জানাই।
জানতে চাইলে যুবলীগ নেতা আব্দুল রহিম বলেন, বর্তমানে আমাদের নিকট কোন কাগজ নেই। আমরা সময় চেয়েছি। কিন্তু দেয়নি। এদিকে জবরদখলকারী ওই যুবলীগ নেতা আব্দুর রহিম নিজেকে বাঁচাতে নানা ষড়যন্ত্র করছেন বলে জানান এলাকাবাসী। তারা আব্দুর রহিমকে গ্রেফতারের দাবি জানান।