যশোরের অভয়নগর উপজেলার পায়ড়ায় নূর জাহান বেগম নামে সংরক্ষিত আসনের এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীদের ভাতা থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করেছেন তিনি। নিজের মেয়ের নামেও করিয়েছেন ৩০ কেজি চালের কার্ড। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নূর জাহান বেগম উপজেলার পায়রা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের সদস্য।
ভুক্তভোগীরা জানায়, সম্প্রতি ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভাতাভোগীদের মাঝে ভাতার টাকা বিতরণ করেন ইউপি সদস্য নূর জাহান বেগম। এসময় প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীদের কাছ থেকে জনপ্রতি দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করেন। টাকা আদায়ের কারণ জানতে চাইলে কার্ড করিয়ে দেওয়া বাবদ মিষ্টি খাওয়ার জন্য এই টাকা নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
পায়রা ইউনিয়নের সমসপুর গ্রামের শ্রবণ প্রতিবন্ধী তানিয়া খাতুনের স্বামী সাইফুল ইসলাম বলেন, স্ত্রীর নামে ভাতার ১০ হাজার টাকা উত্তোলনের পর ইউপি সদস্য নূর জাহান বেগমকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। টাকা না দিলে ভাতা মিলবে না এই কথা বলার পর ভয়ে তাকে টাকা দিয়েছি। একই গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী নাজমুল ইসলাম বলেন, মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে নগদ দুই হাজার টাকা নিয়েছেন ইউপি সদস্য নূর জাহান বেগম। এ বিষয় আরও অভিযোগ করেন ওই ওয়ার্ডের প্রতিবন্ধীরা।
এলাকাবাসী জানায়, নির্বাচিত হওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ইউপি সদস্য নূর জাহান বেগম। তা না হলে প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকা জোরপূর্বক কিভাবে আদায় করেন। শুধু তাই নয়, নিজের মেয়ে উর্মি জাহানের নামে ভিজিডি’র ৩০ কেজি চালের কার্ড করিয়েছেন তিনি। এ ধরণের ইউপি সদস্যের পদ বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না হলে গ্রামের অসহায় মানুষ প্রতিনিয়ত প্রতারিত হতে থাকবে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নূর জাহান বেগম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এরপর ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার প্রমাণ দিলে তিনি সব অভিযোগ স্বীকার করে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীল সাংবাদিকদের বলেন, ইউপি সদস্য নূর জাহান বেগমের বিরুদ্ধে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ বরা হবে।