গাইবান্ধার সদরের কলেজ ছাত্র সিজু হত্যার অভিযোগে গাইবান্ধার সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাদশা আলমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধার সাঘাটা আমলী আদালতে মামলা করেছেন নিহত সিজুর মা রিক্তা বেগম। মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত ।
বৃহস্পতিবার (২১ আগষ্ট) সাঘাটা আমলী আদালতের বিচারক পাপড়ী বড়ুয়া এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আল আসাদ ।
মামলার আসামীরা হলেন সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (১) বাদশা আলম, (২) এএসআই রাকিবুৃল ইসলাম, (৩) এসআই মশিউর রহমান, (৪) এসআই মহসিন আলী, (৫)পুলিশ সদস্য হামিদুল ইসলাম (৬) পুলিশ সদস্য আজাদুল ইসলাম (৭) পুলিশ সদস্য নয়ন চন্দ্র, (৮) পুলিশ সদস্য জয় চন্দ্র, (৯) এএস আই আহসান হাবিব, (১০) পুলিশ সদস্য ধর্ম চন্দ্র বর্মন, (১১) এসআই উজ্জ্বল (১২) ডিউটি অফিসার এ এসআই লিটন মিয়া, স্থাণীয় যুবক (১৩) সাব্বির হোসেন, (১৪) ইউসুফ ও (১৫) মমিনুলসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২৪ জুলাই বিকেলে গাইবান্ধা সাব রেজিষ্ট্রি অফিস চত্বর থেকে সিজুকে সাঘাটা থানায় ডেকে নেয় পুলিশ। থানায় নির্যাতনের পর মৃতপ্রায় সিজুকে থানা সংলগ্ন পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। পরে পুকুরে লাঠি দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে ওই পুকুর থেকে সিজুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাদীপক্ষের অপর আইনজীবী এ্যাড. জাহিদ হাসান জানান, বাদী পক্ষের আইনজীবীদের শুনানী গ্রহণ করে আদালতের বিচারক পাপড়ী বড়ুয়া মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এবং মামলাটি তদন্ত করার জন্য সিআিইডকে নির্দেশ দেন ।
মামলার বাদী নিহত সিজুর মা রিক্তা বেগম জানান, আমার ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি আদালতে মামলা করেছি। ছেলে হত্যাকান্ডের বিচার চাই ।
নিহত সিজু মিয়া (২৫) গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে এবং গিদারি ইউনিয়ন ছাত্র শিবিরের সভাপতি ছিলেন ও ডিগ্রী ২য় বর্ষেূর কলেজ ছাত্র ছিলেন ৷
উল্লেখ্য : পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ২৪ জুলাই রাত দশটার দিকে গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় ঢুকে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করে পুকুরে ঝাঁপ দেয় সিজু মিয়া। পরদিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাঘাটা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের পুকুরের কচুরিপানার মধ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অজ্ঞাতনামা হিসেবে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে। পরের দিন শনিবার পুকুরে সিজুকে পুলিশ কতৃক পিটিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ভাইরাল হলে এলাকায় তোলপার সৃষ্টি হয়৷ পরে সেই দিনই গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কর্যালয় ঘেরাও করে এলাকাবাসি৷ ঘটনাটি তদন্তে চলতি মাসের প্রথম দিকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, অতিরিক্ত ডিআইজি, রংপুর রেঞ্জ অপর সদস্যদ্বয় হলেন মোছাঃ রুনা লায়না অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম ম্যানেজম্যান্ট ডিাইজি রংপুর রেঞ্জ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শরিফুল ইসলাম৷ তবে তদন্তের কোন অগ্রগতি না থাকায় ও সিজু হত্যায় জড়িতদের পুলিশদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় নিহতের মা ঘটনার প্রায় ১ মাস পরে আদালতে মামলা দায়ের করেন ।