ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার নেপথ্যে: আসলাম চৌধুরী

এফএনএস (জহিরুল ইসলাম; সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম) : | প্রকাশ: ২২ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৩৯ এএম
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার নেপথ্যে: আসলাম চৌধুরী

বিএনপির সাবেক যুগ্ন মহাসচিব ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসলাম চৌধুরীর কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সীতাকুণ্ড উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির উদ্যোগে গত ২০ আগস্ট দুপুর ১২ টায় ভাটিয়ারী জলিল স্টেশন আসলাম চৌধুরীর বাসভবনে মোহাম্মদ ইসমাইলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন মহাসচিব ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ইসলাম চৌধুরী এফসিএ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার লিয়াজু  ছিল, যার ফলে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৪ আগস্ট থেকে। ঐদিন আমি কুমিল্লা কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে চলে আসি। কারাগার থেকে বাহিরে সকল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সাথে আমার নেটওয়ার্ক ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রদের আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে আমি কারাগারে থেকেও বিভিন্ন মাধ্যমে তাদেরকে আর্থিক সহ সকল ধরনের সহযোগিতা করেছি।

আসলাম চৌধুরী তার বক্তব্যে আরও বলেন, দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কিছু নেতার ভুল সিদ্ধান্তের কারণে তৃণমূলের সাধারণ নেতাকর্মীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। ২০১৩ সালের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধসহ লাগাতার আন্দোলনের কারণে সারাদেশ অচল হয়ে পড়েছিল। এই আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ভীত কাঁপিয়ে দিয়েছিলল। সেই সময় যদি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে সঠিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারত, তাহলে সে সময় শেখ হাসিনা সরকারের পতন হত। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগানো যায়নি, যার দায়ভার তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বহন করতে হয়েছে। এই ব্যর্থতার কারণে বহু নেতাকর্মী জেল-জুলুমের শিকার হয়।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের দুই-একজন নেতা আওয়ামী লীগের সঙ্গে লিয়াজু করেছিল। আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ৬০ থেকে ৮০টি আসন দেবে। এই ভিত্তিতে তারা ভোটের দিন সকাল থেকে নির্বাচন বর্জনের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা প্রশাসনকে ব্যবহার করে আগের রাতেই ভোট নিয়ে নেয়। ওই নেতারা ভোটের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত গণমাধ্যমকে জানান যে, ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। কিন্তু যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে এবং আসন ভাগাভাগির কোনো লক্ষণ দেখা যায় না, তখন ওই নেতারা হতাশ হন। শেষ পর্যন্ত, বিএনপিকে বগুড়া থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ মাত্র ৫টি আসন দেওয়া হয়। এটি ছিল একটি সাজানো নাটক।

এই সময় তিনি আরও বলেন, আমি জেলে থেকেও প্রমাণ করেছি যে, আমি ঋণখেলাপি নয়। আমার বিরুদ্ধে যতই ষড়যন্ত্র হোক, আমাকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি বলেন, সীতাকুণ্ডের আন্দোলনের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নিয়ে সংসদে একাধিকবার আলোচনা করেছেন। ইত্তেফাক পত্রিকায় পরপর তিনদিন আমাকে নিয়ে আট কলাম রেড হেডলাইন হয়েছে।আমার পুরো পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে এমনকি আমাদের বাড়ির সব পুরুষ লোকদের নামে মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কারাগার থেকে আমি মুক্তি পাওয়ার পর নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছিলাম। চট্টগ্রাম জেলগেইট থেকে বড় দারোগাহাট পর্যন্ত দীর্ঘ পথে প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যেও মহাসড়কের পাশে হাজার হাজার নেতা কর্মী থেকে শুরু করে এলাকার সাধারণ মানুষেরা পর্যন্ত যেই ভালবাসা ও সম্মান দেখিয়েছেন এতে করে দেশে-বিদেশে আমার অবস্থান আরও সুদৃঢ় করেছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে