টনক নড়েছে বিজিবির, সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে পাথর লুটকাণ্ডে তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ০৯:০২ পিএম
টনক নড়েছে বিজিবির, সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে পাথর লুটকাণ্ডে তদন্ত কমিটি গঠন

সিলেটের সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পাথর লুটপাটের ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দফতরের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির লক্ষ্য হলো লুটপাটের ঘটনায় বিজিবির দায়িত্বে কোনো অবহেলা ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা।

শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে লালাখাল এলাকায় টহল কার্যক্রম শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ১৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার জানান, সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বিজিবি সার্বক্ষণিক টহল অব্যাহত রেখেছে। “সাদাপাথর লুটপাটে জড়িত মহল বিজিবি সম্পর্কে নানা ধরনের অপতথ্য প্রচার করছে। তবে বিজিবি ক্যাম্পের আওতাধীন সীমান্তের ৩০০ গজের মধ্যে দুর্বৃত্তরা পাথর লুট করতে পারেনি,” তিনি বলেন।

তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক লুটপাটের পর সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে বিজিবি জনবল বৃদ্ধি করেছে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে। গত দুই মাসে পাথর চুরিতে ব্যবহৃত ছয় শতাধিক বারকি নৌকা জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। লালাখাল, সাদা পাথর, বিছনাকান্দি, জাফলং, শ্রীপুর-রাংপানি, লোভাছড়া সহ সিলেটের সব সীমান্ত সংলগ্ন প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্রে টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে।

স্থানীয় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, পাথর লুটে জড়িত শ্রমিকরা প্রায়ই আগ্রাসীভাবে আচরণ করতো এবং কিছু ক্ষেত্রে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ঘটতো। তবে বিজিবি জানায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত টাস্কফোর্স অভিযান না হলে এত ব্যাপকভাবে লুটপাট সম্ভব হত না। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশও পরিস্থিতির জটিলতা ও মারমুখী পরিবেশের কারণে কার্যকরভাবে লুট প্রতিরোধে অক্ষম ছিলেন।

সাদাপাথর লুটকাণ্ডের পর গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দুনীতি দমন কমিশনের (দুদক) তালিকায় বিজিবি, পুলিশ ও অন্যান্য প্রশাসনিক দপ্তরের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতে বিজিবি সদর দপ্তর উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুবায়ের আনোয়ার বলেন, “বিজিবি সর্বদা তাদের আওতাধীন এলাকায় টহল বজায় রেখেছে। সাম্প্রতিক লুটপাটের পর জনবল বৃদ্ধি এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। যথাযথ প্রশাসনিক সমন্বয় থাকলে এত ব্যাপকভাবে পাথর লুটপাট ঘটানো সম্ভব হত না।”

এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিজিবি আশা করছে, ভবিষ্যতে সিলেটের সীমান্ত সংলগ্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পাথর লুটপাট প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে এবং আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা যাবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে