গাজায় ফের রক্তক্ষয়, ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৮৬ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:২২ এএম
গাজায় ফের রক্তক্ষয়, ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৮৬ জন

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় টানা বিমান ও স্থল হামলায় একদিনে আরও অন্তত ৮৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪৯২ জন। রোববার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে সোমবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার এ পরিসংখ্যান দিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সোমবার সন্ধ্যার পর প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ৫৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন বিমান থেকে নিক্ষিপ্ত গোলায়। বাকি ২৮ জন নিহত হয়েছেন খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে। মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষ আটকে আছেন, যাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি সরঞ্জাম ও লোকবলের অভাবে। ফলে প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালালে ১ হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫১ জন জিম্মি হন। এর জবাবে ওইদিন থেকেই গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সোমবার পর্যন্ত এ অভিযানে মোট ৬২ হাজার ৭৪৪ জন নিহত এবং ১ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯ জন আহত হয়েছেন।

গত ১৯ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল দুই মাসের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল। পরে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় ১৯ জুন আরও এক দফা যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইসরায়েল ও হামাস। কিন্তু ১৮ মার্চ তা ভেঙে আবারও শুরু হয় পূর্ণমাত্রার অভিযান। ওই সময় থেকে সোমবার পর্যন্ত পাঁচ মাসে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১০ হাজার ৯০০ জন এবং আহত হয়েছেন ৪৬ হাজার ২১৮ জন।

এদিকে গত ২৭ মে থেকে গাজায় ত্রাণ ও খাদ্য সংগ্রহে যাওয়া সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব বলছে, এ পর্যন্ত এমন ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২ হাজার ১২৩ জন এবং আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬১৫ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

বর্তমানে ধারণা করা হচ্ছে, হামাসের হাতে বন্দি থাকা জিম্মিদের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ জন এখনও জীবিত আছেন। তাদের উদ্ধারে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘ বারবার এই অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল করা এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে।