দেশে প্রথমবারের মতো রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার তিনটি অঞ্চলকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩-এর ধারা ১৭ ও ১৯-এর আলোকে বিস্তারিত জরিপ ও অনুসন্ধানের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিবরণীতে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলের ২৫টি উপজেলার ২১৫টি ইউনিয়ন (৪,৯১১টি মৌজা)-এর মধ্যে ৪৭টি ইউনিয়ন (১,৫০৩টি মৌজা) অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা-র মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভাকেও অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পানি আইন অনুযায়ী এই এলাকায় পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। খাবার পানি ও গৃহস্থালি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে আগামী এক মাসের মধ্যে একটি কমিটি করণীয় চূড়ান্ত করবে। এছাড়া নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচরে পানির প্রাপ্যতা যাচাইয়ের জন্য সমীক্ষা চালানোর সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমানে ৫০ জেলায় চলমান ভূগর্ভস্থ পানির প্রাপ্যতা যাচাই কার্যক্রম বাকি ১৪ জেলাতেও শুরু করা হবে।
একই সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দুটি জলাভূমি, টাঙ্গুয়ার হাওর ও হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের জন্য প্রথমবারের মতো ‘হাওর প্রতিবেশ সুরক্ষা আদেশ’ জারি করা হয়েছে। এই আদেশের অধীনে হাওর দুটিতে পর্যটন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কৃষি, মৎস্য ও বনায়ন খাতেও করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভায় পানি আইন, ২০১৩-এর দুর্বল কার্যকারিতার ওপর আলোকপাত করে আইনটির প্রয়োজনীয় সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া শিল্প খাতে পানি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ‘পানি ব্যবস্থাপনা নীতি ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এতে উপস্থিত ছিলেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও অন্যান্য দপ্তর-সংস্থার প্রধানরা।