তত্ত্বাবধায়ক নয়, স্থায়ী সমাধান চায় আপিল বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৭ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৪৩ এএম
তত্ত্বাবধায়ক নয়, স্থায়ী সমাধান চায় আপিল বিভাগ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা নয়, বরং নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য কার্যকর ও স্থায়ী সমাধান চায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, আপিল বিভাগ সাময়িক সমাধান নয়, এমন এক কাঠামো গড়ে তুলতে চায় যা ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বারবার বিঘ্নিত করবে না।

বুধবার (২৭ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা চারটি আবেদনের ওপর দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “আমরা এমন সমাধান চাই যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে এবং সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।”

সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট শিশির মনির। অন্যদিকে রাষ্ট্রের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

এর আগে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) প্রথম দিনের শুনানিতে বিএনপি ও জামায়াতের আইনজীবীরা ২০১১ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়কে বিতর্কিত আখ্যা দিয়ে তা পুনর্বিবেচনার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু হয়। ২০০৪ সালে হাইকোর্ট এটি বৈধ ঘোষণা করে। তবে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে এ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেয়। এরপর সংসদে পাস হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী, যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করা হয়।

বর্তমানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক এবং একজন মুক্তিযোদ্ধাসহ মোট ছয় ব্যক্তি এই রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম হাফিজউদ্দিন খান ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে আদালতের এই কার্যক্রম রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছে। আদালতের চূড়ান্ত রায় ভবিষ্যতের নির্বাচনী কাঠামো নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে