বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচনে সমতল জনগোষ্ঠীর সমর্থন চায় বিএনপি। তিনি বলেন, জনগনের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরো কিভাবে সহজ করা যায়, সেগুলো করা হবে। তিনি বলেন, প্রতিটি জাতি-গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতি আমাদের আস্থা ও সম্মান রয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, ভাষার বহুত্ব, সংস্কৃতির বৈচিত্র প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর স্বতন্ত্রবোধ, ভিন্নজাতের সংরক্ষণ এবং এসবের উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। বিএনপি রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল জাতিগোষ্ঠীর সামাজিক, রাজনেতিক, সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক অধিকার এবং জীবনের নিরাপত্তা বিধানে সর্বোচ্চ প্রচেষ্ঠা গ্রহন করা হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতি এটিই আমাদের অঙ্গীকার। বিএনপি ক্ষতায় গেলে প্রতিটি অধিকার বাস্তবায়ন করবে। শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহ টাউন হল তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের প্রথম জাতীয় প্রতিনিধি সমাবেশে প্রধান অতিথির ভার্চুয়ালী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ একটা ভয়াবহ দানবীয় ফ্যাসিস্ট সরকারের দীর্ঘ নির্যাতনের শাসনের পরে একটা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সুযোগ পেয়েছি নতুন বাংলাদেশ তৈরী করার। তিনি বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এবং সেই বাংলাদেশে সকলের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটা চক্রান্ত চলছে বাংলাদেশে। ভবিষ্যতে যে নির্বাচন হওয়ার কথা, সেই নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য একটা গোষ্ঠী চেষ্ঠা করছে। একটা উগ্রবাদ গোষ্ঠী বিভিন্ন প্রকার উগ্রবাদের কথা বলে মানুষকে বিভক্ত করতে চাচ্ছে, বিভাজন সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। আজ আমাদের সকলের দায়িত্ব হবে, একসাথে ঠিক একাত্তর সালে যেমন আমরা লড়াই করেছিলাম আমাদের ভূখন্ডের জন্যে, স্বাধীনতার জন্য, সার্বভৌমত্বের জন্য, আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। সেইভাবে আমরা আজ আমাদের অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করবো, লড়াই করে যাবো। আমাদের বিশ্বাস আছে যে, আমাদের নেতা তারেক রহমান এখন পর্যন্ত যে কাজ করেছেন, তাতে সকল জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেইলক্ষে এগিয়ে যেতে পারবো। তিরি আরো বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এবং সেই বাংলাদেশে সকলের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মৃগেন হাগিদগের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য ফ্রন্টের সভাপতি বিজন কান্তি সরকার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ও এডভোকেট ওয়ারেস আলী মামুন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবুল, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়র অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের ভাইস চেয়ারম্যান সুভাস চন্দ্র বর্মণ প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে নগরীর টাউন হল তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়। মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে ১৫ জন আদিবাসী তরুণীর একটি দল তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে মনোমুগ্ধকর দলগত নৃত্য পরিবেশন করে। এ সময় প্রধান অতিথি তারেক রহমানকে বিভিন্ন সমতল জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে উত্তরীয় ও বিভিন্ন উপহার তুলে দেন। উপহার তুলে দেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহধর্মিণীকেও। পরে প্রধান অতিথির পক্ষ থেকে সমতলের নারিদের মাঝে ২৬টি সেলাই মেশিন তুলে দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অনুষ্ঠানে ৩৭টি সমতল জনগোষ্ঠীর শিল্পীরা স্ব-স্ব এলাকার নৃত্য পরিবেশন করেন। সমাবেশকে ঘিরে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেছে। সমাবেশে দেশের সমতল অঞ্চলের ১২টি জেলায় বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহন করেন।