চিলমারী-সুন্দরগঞ্জের হরিপুর তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধনের ১২দিন পর সেতু এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রশাসনের উদ্যোগে অস্থায়ী একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সেতু উদ্বোধনের রাতেই সেতুর বৈদ্যুতিক সংযোগের ৩শ মিটার মূল্যবান ক্যাবল চুরি হয়ে যায়। এছাড়াও সেতু এলাকায় কিছু ছিনতাইয়ের মতঘটনার প্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার থেকে সেতু প্রকল্প এলাকার দক্ষিণ প্রান্তে এলজিইডি’র অফিসে নতুন স্থাপিত ক্যাম্পে প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছেন ১৬ জন পুলিশ সদস্য। এর মধ্যে ১ জন এসআই, ২ জন এএসআই ও ১৩ জন কনস্টবল রয়েছেন। তারা সেতু এলাকায় নিয়মিত টহল ও নজরদারি চালাচ্ছেন। যাতে কোনো ধরনের চুরি, ছিনতাই কিংবা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটতে না পারে।
ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘সেতুটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এখানে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ক্যাম্পে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং তারা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন।’
এদিকে, সেতু এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, ‘সমপ্রতি এ এলাকায় কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটায় আমরা আতঙ্কে ছিলাম। পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পর সেতু এলাকায় এখন নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভালো। বিশেষ করে রাতের বেলায় চলাচল অনেকটাই নিরাপদ হয়েছে।’
উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের এই সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯২৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার (জিওবি), সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ওফিড) অর্থায়নে এলজিইডির তত্বাবধায়নে সেতুটি নির্মিত হয়েছে। সেতুতে মোট ৩১টি স্প্যান রয়েছে। সংযোগ সড়ক ও নদীশাসনসহ প্রকল্পে প্রায় ১৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।