কালীগঞ্জে ঘন কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা

এফএনএস (টিপু সুলতান; কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:০২ পিএম
কালীগঞ্জে ঘন কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা

তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় কালীগঞ্জে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকেরা শীত ও কুয়াশার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বীজতলা রক্ষায় বিভিন্ন প্রকার ছত্রাকনাশক ছিটিয়েও ফল পাচ্ছেন না। প্রকৃতির এ রূপ দীর্ঘ সময় থাকলে এবার উপজেলায় বোরোর চারার সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস জানান,এবার ৭৮০ হেক্টর জমিতে বোরোর বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে কিনা সঠিক ভাবে তা বলতে পারেনি। অপরদিকে বোরো থান রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১৫ হাজার ৭৯৮ হেক্টর জমিতে। কিন্তু টানা শীত আর ঘন কুয়াশায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় এবার চারা নিয়ে শঙ্কিত কৃষকেরা।উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা জানান, বোরোর বীজতলার অর্ধেকই শীত ও কুয়াশায় বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে নতুন করে আবারও বীজতলা তৈরি করতে হবে। যাঁরা পৌষের শুরুর দিকে বীজতলা তৈরি করে বীজ ফেলেছেন, তাঁরা সেই বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখে শীত ও কুয়াশা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।ধানের বীজতলার অর্ধেকই শীত ও কুয়াশার কারণে মরে যাচ্ছে। কৃষকেরা বীজতলা রক্ষায় বিভিন্ন ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করছেন। কিন্তু তাতে কোনো ফল পাচ্ছেন না।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াশায় বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। শীতের কবল থেকে রক্ষা করতে শত শত বীজতলায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা পলিথিন দিতে পারেননি, তাঁরা খড় দিয়ে ঢেকে রাখছেন। কেউবা বীজতলায় ছাই ছিটিয়ে তা রক্ষার চেষ্টা করছেন।পৌষের কুয়াশায় বীজতলা নষ্টের ঝুঁকি এড়াতে নানা উপায় অবলম্বন করছেন তারা। কিছু কিছু এলাকায় ধানের চারার সুরক্ষায় পলিথিন ও ছাউনি দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিয়েছেন অনেক কৃষক। তবে বেশির ভাগ এলাকায় ঘন কুয়াশার মধ্যেও বীজতলা রক্ষায় নেই কোনো সুরক্ষা।আকস্মিক বৃষ্টির পূর্বাভাস ও ঘন কুয়াশায় গত এক সপ্তাহ যাবৎ উপজেলা জুড়ে বোরো ধানের বীজতলার বাড়তি যত্ন নিচ্ছেন কৃষকরা। তারা বলছেন, কুয়াশা তীব্র হলে বীজতলার অঙ্কুরিত চারার বৃদ্ধি কমে যায়। এ ছাড়া কুয়াশার কারণে ধানের চারা বিবর্ণ হয়ে পড়ে। এতে ভালো চারা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।কৃষকরা পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢাকার কাজে ব্যস্ত। কেউ কেউ বীজতলার বাড়তি পানি নিষ্কাশনের জন্য তৈরি করেছেন ছোট ছোট ড্রেন। এ ছাড়া চারার ডগায় জমে থাকা শিশির ঝরিয়ে দিতে ব্যবহার করছেন পাটকাঠি। বিশেষ করে কালীগঞ্জ কৃষি অফিস বীজ তলার লক্ষামাত্রা বলতে পারছে কিন্তু তা অীর্জত হয়েছে কিনা তা বলতে পারছে না ও কতজন কৃষক এবার বোরো ধান রোপন করবে সেটাও তাদের জানা নাই।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুব আলম রনি জানান, শীত ও কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। তবে প্রতিদিন তিন-চার ঘণ্টা করে রোদ পাওয়া গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে।এখন যাঁরা বীজতলা তৈরি করছেন, তাঁদের আমরা কাদা না করে শুকনা বীজতলা তৈরি করে বীজ বপন করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। আবার অনেকে শীত ও কুয়াশা থেকে বীজতলা রক্ষায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন ও জালানি কাঠের ছাই ছিটিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিদিন সকালে বীজতলার জমির পানি ফেলে দিয়ে নতুন করে পানি দিতে হবে।


আপনার জেলার সংবাদ পড়তে