বরিশালে বিপুল পরিমান জমি থাকে অনাবাদি

এফএনএস (বরিশাল প্রতিবেদক) : | প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম
বরিশালে বিপুল পরিমান জমি থাকে অনাবাদি

বিভিন্ন কারণে বরিশাল বিভাগে বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি অনাবাদি থাকায় ফসল উৎপাদন কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। প্রাকৃতিক ও প্রকৃত কৃষকদের জমি না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে এ সমস্যা চলে আসছে। বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগে অনাবাদি পতিত জমির পরিমাণ ছয় লাখ ৫৪ হাজার ২৫৬ হেক্টর। এরমধ্যে খরিপ-১ মৌসুমে পাঁচ লাখ ৫১ হাজার ৮৯১ হেক্টর, খরিপ-২ মৌসুমে ৫২ হাজার ১৭৯ হেক্টর এবং রবি মৌসুমে ৫০ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে।

সূত্রে আরও জানা গেছে, বিভাগের মধ্যে বরিশাল জেলায় অনাবাদি পতিত জমির পরিমাণ এক লাখ ২৮ হাজার ৭৩৩ হেক্টর। এরমধ্যে খরিপ-১ মৌসুমে ৯৭ হাজার ১৪৬ হেক্টর, খরিপ-২ মৌসুমে ২৮ হাজার ৮৩৭ হেক্টর এবং রবি মৌসুমে দুই হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। ঝালকাঠি জেলায় অনাবাদি জমি ৫১ হাজার ৬৪৯ হেক্টর। এরমধ্যে খরিপ-১ মৌসুমে ৩৪ হাজার ৯৪১ হেক্টর, খরিপ-২ মৌসুমে দুই হাজার ৩৯৮ হেক্টর ও রবি মৌসুমে ১৪ হাজার ৩১০ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে।  

পিরোজপুরে অনাবাদি জমির পরিমাণ ৮৪ হাজার ৮৫৫ হেক্টর। যারমধ্যে খরিপ-১ মৌসুমে ৬১ হাজার ৬৭৬ হেক্টর, খরিপ-২ মৌসুমে ১০ হাজার ৫৮৩ হেক্টর এবং রবি মৌসুমে ১২ হাজার ৫৯৬ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। পটুয়াখালীতে অনাবাদি জমি রয়েছে ১ লাখ ৮৬ হাজার ১৮৪ হেক্টর। এরমধ্যে খরিপ-১ মৌসুমে এক লাখ ৭৫ হাজার ৭৫০ হেক্টর, খরিপ-২ মৌসুমে ৬৩১ হেক্টর এবং রবি মৌসুমে ৯ হাজার ৮০৩ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে।

বরগুনা জেলায় অনাবাদি থাকে ৮০ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমি। যারমধ্যে খরিপ-১ মৌসুমে ৬৪ হাজার ৯৯৮ হেক্টর, খরিপ-২ মৌসুমে পাঁচ হাজার ২৩০ হেক্টর এবং রবি মৌসুমে ১০ হাজার ৭২৭ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। ভোলা জেলায় অনাবাদি থাকে এক লাখ ২১ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমি। এরমধ্যে রবি মৌসুমে অনাবাদি জমি থাকে না। তবে খরিপ-১ মৌসুমে অনাবাদি থাকে এক লাখ ১৭ হাজার ৩৮০ হেক্টর ও খরিপ-২ মৌসুমে থাকে সাড়ে চার হাজার হেক্টর।

বরিশালের কৃষক বন্ধু অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, অনেক কৃষকের নিজস্ব জমি নেই। তারা জমি বর্গা এনে চাষাবাদ করে থাকেন। জমির মালিকের সাথে ফসলের ভাগ নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় অনেক জমি অনাবাদি পরে থাকে। এছাড়া শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধিসহ ফসল আবাদের ব্যয় না ওঠায় কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। পাশাপাশি অনেক কৃষক পেশা বদল করার কারণেও জমি অনাবাদি থাকে।

তবে কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা নাহিদ বিন রফিক বলেন, আগে বরিশাল অঞ্চলে প্রচুর জমি অনাবাদি পরে থাকতো। কিন্তু কৃষি অফিসের নানা ব্যবস্থাপনা ও পরামর্শে এখন অনাবাদি জমির পরিমাণ কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে যে জমি অনাবাদি রয়েছে। তার সিংহভাগ প্রাকৃতিক কারণে। এরমধ্যে রয়েছে নিচু জমিতে পানি থাকা, দীর্ঘদিন ধরে খাল খনন না করায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া, নদী ভাঙনের মুখে থাকা ও ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ জন্মানো। তিনি আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে এ অবস্থার আরও উন্নতি হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে