ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারির পদক্ষেপ নিতে পুলিশ সদরদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্লট জালিয়াতির মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এ চিঠি পাঠান বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনা বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন এবং আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাই আদালতের আদেশ অনুযায়ী এজাহার, চার্জশিট, পরোয়ানাসহ প্রয়োজনীয় নথি ইন্টারপোলের রেড নোটিস আবেদনের সঙ্গে পাঠানো হয়েছে। একইভাবে জয়ের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় তথ্য, পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট নম্বর ও ঠিকানা সংযুক্ত করে রেড নোটিস জারির অনুরোধ করা হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানা যায়। তার ছেলে জয় এর আগেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস শুরু করেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও দেশের বাইরে রয়েছেন।
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ছয়টি প্লট বরাদ্দের অনিয়মের অভিযোগে গত বছরের ডিসেম্বরে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এরপর চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ভাতিজা রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, ভাতিজি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীসহ মোট ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এই মামলাগুলোর অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার অযোগ্য হয়েও প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে ছয়টি প্লট বরাদ্দ নেন তারা।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত এসব মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। পৃথক তিন মামলায় ইতিমধ্যেই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) জমি বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে চলমান এসব মামলায় বৃহস্পতিবার ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতে তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এর আগে আদালতে জব্দতালিকার অন্তর্ভুক্ত ৪৪টি নথি উপস্থাপন করা হয়।