দেশের সবচেয়ে দূষিত ১৩টি নদী পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ

এফএনএস এক্সক্লুসিভ | প্রকাশ: ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৮:২৩ এএম
দেশের সবচেয়ে দূষিত ১৩টি নদী পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ

দেশের সবচেয়ে দূষিত ১৩টি নদী পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। ওই প্রায় ৬০০ কোটি টাকা প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে। আর কাজের সুবিধার জন্য প্রতিটি নদীর আলাদা প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। ওই নদীগুলো হলো গাজীপুর জেলার লবণদহ, নরসিংদীর হাঁড়িধোয়া, রংপুরের শ্যামাসুন্দরী, মুন্সিগঞ্জের লৌহজং, চট্টগ্রামের হালদা, কক্সবাজারের বাঁকখালী, হবিগঞ্জের সুতাং, খুলনার সালতা, রংপুরের আলাইকুড়ি, কিশোরগঞ্জের মগড়া, রাজশাহীর বড়াল, বগুড়ার করতোয়া এবং নাটোরের বারনই। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের ৬৪ জেলার ৬৪টি নদী পরিষ্কার ও পুনরুদ্ধারের টার্গেট নিয়েছে সরকার। আর ওই কাজের অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে বিপন্ন ১৩ নদী নিয়ে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। নদীগুলো যেসব পয়েন্টে দখল আছে তা উচ্ছেদ করা হবে। আর যেখানে দূষণ আছে দূষণ ও দূষণের উৎসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া যেখানে নদী ভরাট হয়ে গেছে সেখানে খনন করা হবে। এ কর্মযজ্ঞের জন্য বাজেটও নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে একেক নদীর জন্য একেক রকম বাজেট হচ্ছে। ওই হিসেবে কোনো নদীর জন্য ৩০ কোটি টাকা বাজেট করা হলেও কোনো নদীর জন্য ৫০ কোটি টাকা বাজেট ধরা হচ্ছে। তবে কোনো নদীর বাজেটই ৫০ কোটি টাকার ওপরে যাবে না।

সূত্র জানায়, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) গবেষণার তথ্যানুযায়ী দেশের দূষিত নদীগুলো মধ্যে লবণদহ, হাঁড়িধোয়া ও সুতাং সবচেয়ে দূষিত নদী। গবেষণায় পানির জারক প্রকৃতি, দ্রবীভূত অক্সিজেন, জৈব অক্সিজেনের চাহিদা (বিওডি) ও রাসায়নিক অক্সিজেনের চাহিদা (সিওডি) পরিমাপ করে নদ-নদীর দূষণ নির্ণয় করা হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে দূষিত তিন নদীর পানির গুণাগুণ প্রায় সমান। লবণদহ, হাঁড়িধোয়া ও সুতাংয়ে পানির ক্ষারতার পরিমাণ যথাক্রমে ৫, ৪ দশমিক ১ ও ৪। অথচ বিশুদ্ধ পানির পিএইচ বা ক্ষারের পরিমাণ ছয় থেকে সাতের মধ্যে থাকতে হয়। তার কম হলে পানিকে আম্লিক ও বেশি হলে ক্ষারীয় বলা হয়। পিএইচের মানমাত্রা বেশি ও কম দুটোই মানবস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর। ওই তিন নদীর পানিতে ভয়াবহ রকম কম দ্রবীভূত অক্সিজেনের মানমাত্রা। লবণদহে অক্সিজেনের পরিমাণ শূন্য দশমিক ২১, হাঁড়িধোয়ায় শূন্য দশমিক ৬ ও সুতাংয়ে শূন্য দশমিক ৪। পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ অবশ্যই ৪ দশমিক ৫ থেকে ৮ মাত্রায় থাকতে হয়। নয়তো জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।

এদিকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সদ্য বিদায়ী সচিব নাজমুল আহসান জানান, ১৩টি নদী নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রতিটি নদীর জন্য ছোট ছোট প্রকল্প করা হচ্ছে। কিছু প্রকল্পের ডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আর কিছু প্রকল্পের ডিপিপি তৈরি করা হচ্ছে।