রাজশাহীর পুঠিয়ায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও গাফিলতির কারণে সারের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে,বিসিআইসি ডিলারদের যোগসাজশে খুচরা সার ডিলারা বেশি দামে সার বিক্রি করছে। অবশ্য সারের বেশি দাম দিলে খুচরা ডিলারদের নিকট পর্যাপ্ত পরিমাণ সার পাওয়া যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে বিসিআইসি সার ডিলার রয়েছে ৮টি। আার বিএডিসি সার ডিলার রয়েছে ১৩টি। পাচঁটি ইউনিয়ন এলাকায় সাব-ডিলার খুচরা বিক্রেতা রয়েছে ৬৩টি। বর্তমানে বোরোধানের জমিতে সার দেওয়ার মৌসুম চলছে। কিন্তু কৃষকরা সরকারি বাজার মূল্য অনুযায়ী সার কিনতে পাচ্ছেন না। এতে করে অনেক গরীর শ্রেনির কৃষকরা ধান রোপন করে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সরকার নির্ধারণ করে দেওয়া সারের বাজার মূল্য পটাশ ২০ টাকা, ইউরিয়া ও টিএসপি ২৭ টাকা, ডিএপি ২১ টাকা কেজি করে খুচরা বিক্রি করতে হবে। কৃষকদের অভিযোগ, যে সারগুলি ধানে দেওয়ার বেশি প্রয়োজন রয়েছে। সে সারগুলি ডিলারা বিভিন্ন অজুহাত দেখায়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে রেখেছেন। অবশ্য বেশি টাকা দিলে,সবরকম সার খোলা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। গন্ডগোহালী গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, সারের কোনো সংকট নেই। বিসিআইসি ডিলাররা যোগসাজশ করে খুচরা ডিলারদের দিয়ে বেশিদামে সার বিক্রি করাচ্ছেন। শুধুমাত্র কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও গাফিলতির কারণে বেশিদামে কৃষকদের সার কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিটি ডিলারের গোডাউলে শত শত বস্তা বিভিন্ন রকম সার রয়েছে। কৃষকদের সঙ্গে প্রতারনা করে খুচরা বাজারে পটাশ বিক্রি হচ্ছে ৩০ হতে ৩৫ টাকা, ইউরিয়া, টিএসপি ৪০ হতে ৫০ টাকা, ডিএপি ২৫ হতে ৩০ টাকা কেজি করে বিক্রি করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিআইসি এক ডিলার বলেন, সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিসের কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে, আমাদের কয়েকজন বিসিআইসির ডিলার বেশিদাম দিয়ে গোপনে সাব-ডিলারদের নিকট সারগুলি বিক্রি করে দিয়েছেন। এরপর হতে খুচরা বিক্রেতারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অতিরিক্ত বেশিদামে বাজারে সার বিক্রি করছে। তিনি আরো বলেন, প্রতিমাসে কৃষি অফিস সার ও বালাইনাষক ডিলারদের নিকট হতে টাকা নিয়ে থাকেন। তাই ডিলারদের বিরুদ্ধে অফিস কোনো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারছে না। ধনঞ্জয়পাড়া গ্রামের সেলিম হোসেন নামের কৃষক বলেন, বিসিআইসি ডিলারা সরাসরি কৃষকদের মাঝে সার বিক্রি করাকে ঝামেলা মনে করছে। কারণ কৃষকদের মাঝে সারের দাম বেশি নিলে মূর্হুতের মধ্যে গোপন ফাঁস হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই খুচরা ডিলারদের নিকট বেশিদামে সার বিক্রি করলে কোনো ঝমেলায় পড়ার সম্ভবনা নেই। ভালুকগাছি ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের সবুজ আলি বলেন,আমি ৫ বিঘা জমিতে এ বছর ধান লাগায়ে বিপদে পড়ে গিয়েছি। ডিলাদের নিকটে সার নিতে গেলে শুধু সার নাই নাই বলছে। আমার মতো উপজেলার অনেক ধান চাষিরা শুধুমাত্র সারের সংকটের জন্য এবছর কম ধান লাগিয়েছেন। বেলপুকুর ইউনিয়নের কৃষক কাশেম আলি বলেন,উপজেলা কৃষি অফিস সঠিকভাবে সারের বিষয়টি দেখাশুনা করলে ডিলারা বেশিদামে সার বিক্রি করার সাহস পেত না।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃমি রানী সরকার বলেন, এ উপজেলায় সারের কোনো সংকট নেই। চলতি মাসে ভেতর আবার নতুন করে ডিলারদের কাছে সার পৌঁছে যাবে। আর সেই সারগুলো আমরা তদারকি করে কৃষক পর্যায়ে বিক্রি করব। ক্ষুদ্র ডিলাররা অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করলে আর কেউ অভিযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।