ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাহিত্যিক অধ্যক্ষ মো. ইসমাইল হোসেন এতিমখানা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। কাগজপত্রে যেখানে ডজনখানেক এতিমের কথা উলেখ আছে, অনুসন্ধানে দেখা গেছে বাস্তবে এতিম সংখ্যা তার চেয়ে অনেক কম। সরকারি বরাদ্দের অর্থ শিশুদের খাদ্য, পোশাক ও শিক্ষায় ব্যয় না হয়ে আত্মসাত করে অন্য খাতে ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। তারা আরও অভিযোগ করেন এই এতিমখানার পরিবেশ অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন ও পরিবেশনকরা খাদ্যের মান নিম্নমানের। নিয়মিত চিকিৎসা সেবা হয় না।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, এতিমখানাটিতে ৩৮ জন এতিমের নামে প্রতিবছর প্রায় ৯ লাখ ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, বরাদ্দ পাওয়া প্রতি এতিমের বিপরীতে দ্বিগুণ শিক্ষার্থী থাকার কথা। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখা গেছে, নিবন্ধিত ৭৬ জনের বেশি থাকার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত বসবাস করে মাত্র ৮-১০ জন শিশু।
প্রতিষ্ঠানের বাবুর্চি সাংবাদিকদের জানান, তিনি দৈনিক সর্বোচ্চ ৫-৭ জনের জন্য রান্না করেন। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, “সরকার এতিমদের জন্য যে অর্থ দেয় তা দিয়ে কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণ, বাবুর্চি ও হুজুরের বেতন দেয়, কিন্তু এতিমদের উন্নয়নমূলক কাজে নগণ্য অংশ ব্যয় করা হয়।”
এক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এতিমখানায় আসলে কোনো পূর্ণাঙ্গ আবাসন ব্যবস্থা নেই। কাগজে-কলমে দেখানো হয় যে সব শিশু এখানেই থেকে পড়াশোনা করছে, কিন্তু অধিকাংশ সময় ভবন ফাঁকা থাকে।”
এ ব্যপারে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক জানান, কতজন এতিমের সরকারী বিল তুলা হয় সেটা আমি জানিনা, এটা সভাপতি সম্পাদক জানেন। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কাগজপত্রে চেয়ে বর্তমানে কম আছে। মাদ্রাসায় ছাত্ররা থাকে না পালিয়ে বাড়ি চলে যায়।
রাজাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল এর কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে এতিমের সংখ্যা কম আছে এবিষয়ে একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বাকি অভিযোগের বিষয় তদন— করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, প্রকৃত এতিমদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে অবিলম্বে তদন— করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।