তিন শিক্ষককে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে আজীবনের জন্য বিরত রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বরিশাল নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত কলেজ একাডেমিক ভবনের সামনে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিতে আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম।
গত ৬ মে আমাদের আন্দোলনে বহিরাগতদের এনে হামলা চালানো হয়। আমরা হামলাকারী ও তাদের মদদদাতা কলেজের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু ঘটনার দীর্ঘ চার মাস হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। তারা আরো বলেন, শিক্ষক আলী আজগর, সাইদ হোসাইন রনি ও ফরিদা বেগম এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন।
বর্তমানে আমরা বরিশাল নার্সিং কলেজ, বরিশালের সার্বিক শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত কল্পে অভিযুক্ত তিন শিক্ষক আলী আসগর, ফরিদা বেগম এবং সাইব হোসাইন রনিকে বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে আজীবনের জন্য বিরত রাখার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি অন্য তিন শিক্ষক জাকির হোসেন, হাসিনা বেগম এবং আনোয়ারাকে ক্লাস রুটিনে রাখলেও তাদের শিডিউলে বিকল্প অন্য শিক্ষককে রুটিনে রাখতে হবে।
শিক্ষার্থী শাকিল জানান, শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) নার্সিং কলেজের মেয়েদের পুরাতন হোস্টেলের ছাদের অংশবিশেষ ভেঙে পড়ে। এতে একজন ছাত্রী গুরুতর আহত হয়ে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। কিন্তু হোস্টেলের এ দুরবস্থা ইতোপূর্বে কলেজ প্রশাসনকে জানানো হলেও তারা যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি।
সেজন্য নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং হোস্টেলের সার্বিক সংস্কার এবং অভিযুক্ত শিক্ষকদের ক্লাস রুটিন থেকে অপসারণের দাবিতে রবিবার সকাল থেকে বরিশাল নার্সিং কলেজের একাডেমিক ভবন তালাবদ্ধ করে বিক্ষোভ করা হয়। যদিও পরবর্তীতে প্রশাসনের অনুরোধে গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকদের ক্লাস রুটিন থেকে অপসারণ ব্যতীত আরও বেশ কিছু দাবির কথা শিক্ষার্থীরা তুলে ধরেছে। দাবিগুলো হলো-হোস্টেলের মেইন গেটে সার্বক্ষণিক বাধ্যতামূলক একজন দারোয়ান রাখা এবং রেজিস্টার খাতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যাওয়া-আসা নিয়ন্ত্রণ করা।
রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত পকেটগেট খোলা রাখা।শিক্ষার্থীদের অবিভাবকদের জন্য ওয়েটিং রুমের ব্যবস্থা করা, কলেজের সাতটি ইয়ারের জন্য ন্যূনতম ১৪টি রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা করা, হোস্টেলের বৈদ্যুতিক লাইনসহ যাবতীয় বৈদ্যুতিক ত্রুটি অতিসত্বর মেরামত করা এবং এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের থেকে কোনো ধরনের চাঁদা আদায় না করা, উভয় হোস্টেলের প্রতি রুমের দরজা, জানালা, লাইট, ফ্যানসহ সব নষ্ট জিনিসপত্র অনতিবিলম্বে ঠিক করা, বেসরকারি বাবুর্চিদের বেতন এবং মেসের প্রতি মাসের গ্যাসের বিল কলেজ কর্তৃপক্ষের বহন করা,
হোস্টেলে অতিসত্বর ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করা, প্রতি মাসে হোস্টেলের প্রত্যেকটি পানির ট্যাঙ্কি পরিষ্কার করা এবং বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য ফিল্টারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের সব দাবি কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া বিনাশর্তে দ্রুত মেনে নিতে হবে, তা না হলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে।