চিলমারীতে হাতের চাপে ভেঙে যাচ্ছে সেতুর গাইড ওয়ালের স্লাব

এফএনএস (মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম সিদ্দিক; চিলমারী, কুড়িগ্রাম) : | প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:৫৮ পিএম
চিলমারীতে হাতের চাপে ভেঙে যাচ্ছে সেতুর গাইড ওয়ালের স্লাব

কুড়িগ্রাম চিলমারীর রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা এলাকায় খালের উপর সেতু নির্মাণে চরম অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেতুটির সংযোগ সড়কের গাইড ওয়ালের স্লাব সামান্য চাপেই ভেঙে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি জানাজানির পর এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ‘সেতুটির মূল কাজ শেষ হয়েছে, এখন সংযোগ সড়কের গাইড ওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু গাইড ওয়ালের স্লাবগুলো নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সামান্য চাপ পড়লেই স্লাব ভেঙে ধূলায় পরিণত হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তথ্য মতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে রংপুর বিভাগ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ৬৮ মিটার সেতুটির কাজ ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর শুরু হয়। দরপত্র অনুযায়ী সেতুটির কাজ ২০২৩ সালের ৮ জুন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি শেষ করতে পারেনি। পরে কাজটির মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ৩ কোটি ৪০ লাখ ৩১ হাজার ২৯৬ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতুটির কাজ করছে মেসার্স বসুন্ধরা এণ্ড মেসার্স খায়রুল এন্টার প্রাইজ। 

সরেজমিনে সেতু এলাকা গিয়ে দেখা যায়, মূল সেতুর কাজ শেষে সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। সংযোগ সড়কের গাইড ওয়ালে ব্যবহৃত কংক্রিটের ভাঙ্গা স্লাবের স্তুপ পড়ে আছে। 

পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমরা দেখেছি, নির্মাণকাজের সময় সিমেন্ট-পাথরের গুণগত মান ঠিক ছিল না। এখন তার ফল ভোগ করছি। স্লাবে হাতের চাপ পড়লেই স্লাবের কংক্রিট ভেঙে ধূলায় পরিণত হচ্ছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই সেতু আমাদের চলাচলের একমাত্র পথ। সেতু নির্মাণে এতটাই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে যে সেতুটির স্থায়ীত্ব নিয়ে আমরা শঙ্কায় রয়েছি। নানা অনিয়মের মধ্যে দিয়ে সেতুটির কাজ সম্পন্ন হচ্ছে, অথচ বারবার স্থানীয় এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেও কাজের গুণগত মান ঠিক হয়নি।’  

এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী লেলিন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। রমনা মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আঁকা বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। জননিরাপত্তা নিয়ে কোনো আপস করা হবে না।’

উপজেলা প্রকৌশলী জুলফিকার আলী বলেন, ‘স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সেতু এলাকায় যাই। সেখানে রিজেক্টেড কিছু ব্লক দেখতে পাই। যেগুলো স্লাবের উপর রেখে দিয়েছে, আমি তাৎক্ষণিভাবে সেগুলোকে অপসারণ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে জানিয়েছি। অবশ্যই এ ধরণের নিম্ন মানের ব্লক ব্যবহার করা হবে না।’

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে