কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে কারাগারে থাকা কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে হাইকোর্ট ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ সুমনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী ফয়জুল্লাহ ফয়েজ। সাংবাদিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবি।
ঘটনার ইতিহাস অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১৩ মার্চ রাতে জেলা প্রশাসনের একটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের ছদ্মবেশে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের বাসায় অভিযান চালানো হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনের মধ্যে প্রশাসনের একটি পুকুরের নামকরণ ও অনিয়ম তুলে ধরা হয়। অভিযানে তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হত্যার হুমকি এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার পর তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলায় তৎকালীন আরডিসি নাজিম উদ্দিন, এনডিসি রাহাতুল ইসলাম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমাও জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়।
এর আগে, ২ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালত সুলতানা পারভীনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর আসামি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। হাইকোর্টের ছয় মাসের জামিন আদেশের মাধ্যমে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।
এ মামলার মাধ্যমে দেশের সাংবাদিকরা এবং মানবাধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিনের আলোচিত মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের সাক্ষী হয়েছেন। আদালতও জানিয়েছে, সকল অভিযুক্তের ক্ষেত্রে প্রমাণভিত্তিক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।