ড্রাগন ফল চাষে বাজীমাত

এফএনএস (আতাউর রহমান কাজল; শ্রীমঙ্গল, মৌলভী বাজার) : | প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০২:৫১ পিএম
ড্রাগন ফল চাষে বাজীমাত

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আকবরপুর গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা মো. আব্দুল মান্নান  নিজের শ্রম ও মেধায় গড়ে তুলেছেন এক অনন্য মিশ্র ফল বাগান। প্রায় ৫৪৪ শতক জমিতে বিস্তৃত এই বাগানে রয়েছে রামবুটান, লাল কলা, আম, লিচু, কফি, আনারস, কাঁঠাল, মাল্টা, কমলা লেবুসহ নানারকম ফলের সমারোহ। সারাদিনের পরিশ্রমে তিনি বাগান পরিচর্যায় নিয়োজিত থাকেন, সাথে নিয়মিত সহযোগিতা করছেন দুই থেকে তিনজন শ্রমিক।

২০২০ সালে আব্দুল মান্নান আকবরপুর কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে ১ হাজার ড্রাগন ফলের চারা কিনে আনেন।  সেই চারা তিনি নিজ বাগানে রোপণ করেন এবং পরবর্তীতে কলমের মাধ্যমে এর সংখ্যা বাড়ান। বর্তমানে তার ৫০ শতক জমিতে প্রায় ৪ হাজার ড্রাগনের চারা রয়েছে।

ড্রাগন গাছ  রোপণের দুই বছর পর থেকে ফল দিতে শুরু করে। সেই হিসেবে ২০২২ সাল থেকে মান্নানের বাগানে নিয়মিত ড্রাগন ফল আসছে। ইতোমধ্যে তিনি প্রায় ২ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি করেছেন। বাজার দর অনুকূলে থাকায় সামনের দিনগুলোতে এ খাত থেকে আরও লাভবান হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

তবে লাভজনক হলেও ড্রাগন চাষে নিয়মিত পরিচর্যা অত্যন্ত জরুরি বলে জানান মান্নান। তিনি বলেন,  আগাছা পরিষ্কার, জৈবসার প্রয়োগ এবং পোকামাকড় দমনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হয়। এতে বাড়তি খরচ ও শ্রমের প্রয়োজন হলেও ফলন এবং মান ভালো থাকে।

গতকাল সরেজমিন মান্নানের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ ড্রাগন গাছে ঝুলছে টুকটুকে লাল ফল। চাষি আব্দুল মান্নানের পরিশ্রম আর মনের টানে সাজানো এই বাগান স্থানীয়দের কাছেও এক বিস্ময়কর দৃশ্য হয়ে উঠেছে।

একসময় মৌলভীবাজার জেলায় শুধু ঐতিহ্যবাহী ফলই উৎপাদিত হতো। কিন্তু আব্দুল মান্নানের মতো উদ্যোগী কৃষকরা এখন রামবুটান, কাজুবাদাম কিংবা ড্রাগনের মতো অপ্রচলিত ফল চাষ করে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছেন। এর ফলে কৃষি অর্থনীতিতে যেমন বৈচিত্র্য আসছে, তেমনি কৃষকরা নতুন বাজারও খুঁজে পাচ্ছেন।

আব্দুল মান্নানের এই বাগান শুধু ব্যক্তিগত সাফল্যের নয়, বরং স্থানীয় কৃষির সম্ভাবনা ও উদ্ভাবনী শক্তিরও প্রতীক। স্থানীয়রা বলছেন, আব্দুল মান্নানের ড্রাগন বাগান এলাকার কৃষকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠেছে। ঐতিহ্যবাহী ফসলের বাইরে গিয়ে আধুনিক ও অপ্রচলিত ফল চাষ করে তিনি সম্ভাবনার নতুন পথে হাটছেন। অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন এলাকার কৃষকরা।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে