চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে চাকসু ভবনের নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে প্রার্থীদের মাঝে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করেছে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা, যেখানে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৬৮ শিক্ষার্থী। ফলে এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৬৩৪ জন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন জানান, মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমাদান চলবে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। ইতিমধ্যে প্রথম দিনে ক্রীড়া সম্পাদক পদে শাহজালাল হলের শিক্ষার্থী তায়েবুল আলম ফরাজী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। নির্বাচনে অংশ নিতে হলে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট (মাদক পরীক্ষা) রিপোর্ট জমা দিতে হবে, যা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে করাতে হবে। এছাড়া মনোনয়নপত্র সংগ্রহে কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য ৩০০ টাকা এবং হল সংসদের জন্য ২০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব এ কে এম আশরাফুল হক সিদ্দিকী জানিয়েছেন, মনোনয়নপত্র নিতে হলে অনলাইনে প্রকাশিত ভোটার তালিকার প্রমাণ এবং ভোটার আইডি নম্বর দেখাতে হবে। মনোনয়ন জমার সময় প্রার্থীর ছবি, পরিচয়পত্র এবং ডোপ টেস্টের ফলাফল জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২১ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৩ সেপ্টেম্বর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশ হবে চূড়ান্ত তালিকা। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে প্রচার চালানোর সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা। আগামী ১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ, যেখানে ডাকসুর মতো ওএমআর পদ্ধতিতে ভোট দেওয়া হবে।
চাকসুর এই নির্বাচনে ভিপি, জিএস, এজিএস ছাড়াও ক্রীড়া, সাহিত্য-সংস্কৃতি, দপ্তর, সমাজসেবা, স্বাস্থ্য, নারী কল্যাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, গবেষণা, যোগাযোগ ও আবাসন, আইন ও মানবাধিকার, পরিবেশ ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদকসহ ২৬টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি হল সংসদেও বিভিন্ন পদে ভোট হবে।
দীর্ঘ তিন যুগেরও বেশি সময় পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চাকসু নির্বাচনকে শিক্ষার্থীরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। এর আগে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এবার রাজনৈতিক দলবিহীন সরকারের অধীনে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও এ নির্বাচন হতে যাচ্ছে।