কক্সবাজার শহরে গায়েবি মসজিদ নামেই অধিক পরিচিত এই মসজিদটিকে ঘিরে রহস্যের যেনো শেষ নেই। স্থানীয়দের বিশ্বাস, রাতে এ মসজিদে নামাজ পড়েন জিনেরা। রাত যত গভীর হয়, জিনেদের আনাগোনাও ততো বাড়ে। তবে বর্তমানে দিনদিন মানুষের বসবাসের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াই জিনেদের তেমন অস্তিত্ব নেই বললেই চলে।
কক্সবাজার পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় কয়েকশত বছরের পুরোনো সাচী চৌধুরী জামে মসজিদটির অবস্থান।
জানা গেছে এটি প্রতিষ্ঠা করেন সাচী চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি। তবে কবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়, তা জানা যায় না। মসজিদটি বিভিন্ন নামে পরিচিত। অনেকেই বলেন সাচী মসজিদ। আবার অনেকের কাছে মুঘল আমলের মসজিদ, গায়েবি মসজিদ । কিন্তু এটি আসলেই কোন আমলে বা কে তৈরি করেছিল, তার সঠিক তথ্য এখনো কেউ জানেন না।
এই মসজিদে মুসলিম সম্প্রদায় ছাড়াও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষও আসেন প্রতিদিন। মনের আশা পূরণ করতে বিভিন্ন মানত নিয়ে তারা আসেন এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদে। মসজিদটি আয়তনে খুব ছোট এবং দেখতে বেশ সুন্দর
স্থানীয় সূতে জানা যায়, ১৬০০-১৭০০ খ্রিষ্টাব্দে শাহ সুজার আমলে একটি মসজিদ তৈরি হয়েছিল। এটি চৌধুরীপাড়া মসজিদ বা আজগুবী মসজিদ নামেও পরিচিত।
আসলে মসজিদ কে তৈরি করেছিল, এর সঠিক তথ্য বা ইতিহাস কেউ জানে না। এমনকি কত বছর আগে নির্মিত, তা-ও জানা নেই। অনেকেই বলেন এই মসজিদের বয়স সর্বনিম্ন ৪০০ বছর অথবা ৬০০ বছর হবে। মানুষের বিশ্বাস, এই মসজিদ জিনেরা তৈরি করে গেছেন।
তবে স্থানীয় জমিদার বংশের মো: মহিবুল্লাহ বলেন,
মসজিদটি মুঘল সম্রাট আমলেরও আগে নির্মিত হয় এবং বাবরি মসজিদের আদলেই এই মসজিদটি নির্মিত।
মূল মসজিদের পূর্বে যেখানে বারান্দা ছিল, বর্তমানে সেখানে নতুন করে মসজিদ বাড়ানো হয়েছে। প্রায় সাত কাতার মতো বারান্দার জায়গাটি এখন দ্বিতল করা হয়েছে নামাজের জন্য।
মসজিদের দক্ষিণ পূর্ব পাশের বিরাট এলাকাজুড়ে কবরস্থান। উত্তরে বিশাল দীঘি। সব মিলিয়ে নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও আধ্যাত্মিক পরিবেশে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে প্রশান্তি লাভ করেন।
মসজিদের নির্মাণশৈলী ও স্থাপত্য সৌন্দর্য সবার নজর কাড়ে। মসজিদের দেওয়াল প্রায় পাঁচ ফুট চওড়া। কোথায়ও লোহা ব্যবহার করা হয়নি। চুন-সুরকি দিয়ে তৈরি মসজিদের দেয়াল ও গম্বুজ। মসজিদটির ওপর রয়েছে একটি বিশালাকার গম্বুজ।
মসজিদের ঈমাম, হাফেজ আলাউদ্দিন জানান, মসজিদটি অনেক পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী হওয়ায় দুর দুরান্ত থেকে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এখানে আসে ইবাদত করতে।
মুসলিম সহ অন্যান্য সম্প্রদায়ও এই মসজিদকে সমানভাবে মান্য করে বলে দিন দিন এই মসজিদে দর্শনার্থী বাড়ছে তাই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটিকে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।