বার ভূইঁয়ার অন্যতম মসনদ-ই-আলা বৃহত্তর ভাটিরাজ্যের অধিপতি বাংলার মহাবীর ঈশা খাঁ’র ৪২৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবাব (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫)। বীর ঈশা খাঁ স্মৃতি পাঠাগারের আয়োজনে ঈশা খাঁর স্মৃতি জড়িত জঙ্গলবাড়িতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করবে বলে জানিয়েছেন পাঠাগারের সভাপতি মো:আমিনুল হক সাদী।
ঈশা খাঁ গবেষক তথ্য সংগ্রাহক ও লেখক আমিনুল হক সাদীর ‘ভাটিরাজ্যের অধিপতি মহাবীর ঈশা খাঁ ইতিহাসে উপেক্ষিত’ প্রবন্ধে লিখেছেন, ১৫৩৬ মতান্তরে ১৫৩৭ সালের ১৮ অক্টোবর মতান্তরে ২৫ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে জন্ম গ্রহণ করেন এই মহাবীর। তিনি প্রথমে সরাইলে পরবর্তীতে সোনারগাঁওয়ে রাজধানী স্থাপন করে পুর্ব বাংলার শাসক ছিলেন। ১৫৯৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বৃহত্তর ভাটিরাজ্যের অধিপতি মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁ গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুরে মৃত্যুবরণ করেছিলেন।
১৫৮৪ খ্রি: কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়িতে দিল্লীর আনুগত্যশীল কোচ রাজা লক্ষণ হাজরাকে পরাজিত করে সেখানে বৃহত্তর ভাটি রাজ্যের রাজধানী স্থাপন করেন বাংলার স্বাধীন শাসক ঈশা খাঁ। ঈশা খাঁ ৬৩ বছরের মধ্যে ৩৬ বছর মোঘলদের সঙ্গে অবিরাম যুদ্ধ করেন। শুধু তাইনা ১৫৯৭ খ্রি: এগারসিন্ধুর দুর্গে সম্্রাট আকবরের সেনাপতি মানসিংহকে পরাজিত করে বঙ্গের প্রথম স্বাধীনতা আনয়ন করেছিলেন। ১৫৯৯ খিস্ট্রাব্দের দিকে ঈশা খাঁ কিছুদিনের বিশ্রামের জন্য সোনারগাঁও থেকে মহেশ্বরদী পরগণা বর্তমান গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের বক্তারপুর দুর্গের প্রাসাদভাটিতে গমণ করেন। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে শারিরিকভাবে খুবই দুর্বল হয়ে যান। রাজকীয় চিকিৎসায় অবিরাম চেষ্টা করেও তাকে সুস্থ করে তুলতে ব্যর্থ হন। এই অবস্থায় ১৫৯৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বৃহত্তর ভাটিরাজ্যের অধিপতি মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁ গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুরে মৃত্যুবরণ করেন এবং সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়।
বীর ঈশা খাঁ স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আমিনুল হক সাদী বলেন, এই মহাবীরের স্মৃতিবিজড়িত অনেক স্থান ও দুর্গ আজ ইতিহাসে উপেক্ষিত। তবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মহাবীর ঈশা খাঁ’র স্মৃতি বিজড়িত জঙ্গলবাড়িটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণ করে একটি জাদুঘরে রুপান্তর করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১০ একর জমি অধিগ্রহণ পুর্বক ঈশা খাঁর স্মৃতি জড়িত দরবার ও ঈশা খাঁ শাহী মসজিদের সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছে। ঈশা খাঁকে নিয়ে গবেষণার লক্ষ্যে এগারসিন্ধুর দুর্গ ও জঙ্গলবাড়ি দুর্গ নগরীর খনন কাজ পরিচালনা করে প্রাচীন নিদর্শন ও অনেক প্রত্নবস্তু সংরক্ষণ করেছে।
ঈশা খাঁ গবেষক সাদী আরও জানান, ঈশা খাঁ আমাদের অহংকার ও আমাদের গর্বের। ২০০১ সাল থেকে আমরা বীর ঈশা খাঁ’র স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল করে আসছি। প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এবারে মহাবীর ঈশা খাঁ’র ৪২৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা বীর ঈশা খাঁ স্মৃতি পাঠাগারের আয়োজনে ঈশা খাঁর স্মৃতি জড়িত জঙ্গলবাড়িতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করছি। এতে পাঠাগারের উপদেষ্টা, দায়িত্বশীলগণ, ঈশা খাঁ গবেষক ও ভক্তদেরকে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রন জানিয়েছেন।