নড়াইলের কালিয়া ফেরী পারাপারে ইউএনও’র ভিআইপি প্রটোকলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি শিরোনামে ২২ ডিসেম্বর দুটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে ভিআইপি প্রটোকলে কালিয়ার ইউএনও ফোন করে দেড় ঘন্টা ফেরী আটকে রেখে তিনি ফেরী পার হন। যার কারণে হাজার হাজার যাত্রী ভোগান্তির শিকার হয়েছে। অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত ওই সংবাদটি মিথ্যা, বানোয়াট ও বুদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন ফেরীর ড্রাইভার হানিফ মিয়া ও ওইদিন ফেরীর যাত্রীরা। এ ধরণের সংবাদ প্রকাশ করায় সাধারণ যাত্রীরা তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন সৃষ্টি হলে প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধানে গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে নবগঙ্গা নদীর বারইপাড়া ফেরীতে গিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ফেরী চলাচল শুরু হয়। কালিয়ার পূর্বপারে বারইপাড়া ফেরীঘাটে আসে জোড়সময়ে। কালিয়ার বারইপাড়া পার থেকে বিজোড় সময়ে ছেড়ে যায় কালিয়ার বিপরীত কাঞ্চনপুর ঘাটে। এ নিয়মেই চলাচল করে নবগঙ্গা নদীর বারইপাড়া-কাঞ্চনপুর ফেরীঘাটের ফেরী। তবে, এ্যাম্বুলেন্স বা রোগীর গাড়ী ও বিশেষ জরুরী প্রয়োজনে মাঝে মধ্যে দ্রুত পার করে দেওয়া হয় যাত্রীদের। সে হিসাবে দুপুর দুইটায় কাঞ্চনপুর ঘাট থেকে বিকাল ৩টায় কালিয়ার বারইপাড়া ঘাটে ফেরীটি যাওয়ার কথা থাকলেও ওইদিন ইউএনওকে নিয়ে ফেরীটি ৩টা ১৭ মিনিটে ঘাটে যায়। এতে ফেরীটের বিলম্ব হয় ১৭ মিনিট সময়। এতটুকু বিলম্বে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি বোধগোম্য নয় বলে ওইদিনের ফেরীর যাত্রী সাধারণসহ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। কালিয়া পৌর এলকার বাসিন্দা উজ্জ্বল শেখসহ একাধিক সাধারণ যাত্রীরা জানান, কালিয়ার বারেইপাড়া ঘাটে ফেরীতে সাধারণ মানুষের কোন দুর্ভোগ পরিলক্ষিত হয়নি। যাত্রীরা আরো জানান, এ ফেরীর মাধ্যমে জেলা ও উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সাধারণ মানুষের কল্যাণেই বিভিন্ন স্পটে যাতায়াত করেন। তাছাড়া বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য নেতা-কর্মীরা গাড়ীসহ পারাপার হয়ে থাকেন এ ফেরী দিয়ে। গাড়ীর যাত্রী ছাড়া সাধারণ মানুষ তেমন একটা পার হয়না। সাধারণ যাত্রীরা সাধারণত খেয়া পারাপার হয়ে যাতায়াত করেন। অথচ সংবাদটিতে ফেরীতে হাজার হাজার যাত্রী ভোগান্তির শিকার হয়েছেন মর্মে মিথ্যা তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। কাজেই, ফেরীতে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তির তেমন কোনো সুযোগ নেই। কালিয়ার ইউএনও’র নামে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তা আদৌ সত্য নয়। এ বিষয়ে ওই ফেরীর চালক হানিফ মিয়া জানান, মাসে বিশেষ ক্ষেত্রে ফেরী ছাড়তে ১০/২০ মিনিট দেরী হতেই পারে। সে অনুযায়ী ঘটনার দিন ফেরী ছাড়তে আনুমানিক ১৭ মিনিট দেরী হয়েছিল। এতে যাত্রী ভোগান্তির কোনো কারণ নেই। বরং কালিয়ার ইউএনও’ স্যারের সুনাম ক্ষুন্ন করতে হীন মানষিকতায় উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে বলে তিনিসহ অন্যান্য যাত্রীরা মন্তব্য করে উক্তরূপ মিথ্যা সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।