রাজশাহীর মোহনপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষে সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ মো: বানী ইয়ামিন বখতিয়ার।জানা গেছে, রাজশাহী শহর থেকে উত্তরে ২৪ কিলোমিটার দূরত্বে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের পশ্চিম পাশে এক মনোরম প্রকৃতিক পরিবেশ বেষ্টিত সুবিশাল ক্যাম্পাস নিয়ে ১৯৭০ স্থাপিত হয় মোহনপুর কলেজটি। প্রতিষ্ঠার পর অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে কলেজটি উচ্চ মাধ্যমিক ছাড়াও স্নাতক (পাস) ও স্নাতক ( সম্মান) শ্রেণিতে পাঠ দানের সক্ষমতা অর্জন করেছে। কলেজটি মোহনপুর উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। ২০১৮ সালে মোহনপুর সরকারি কলেজ হিসেবে জাতীয় করণ করা হয়। আগে থেকেই কলেজের সুনাম রয়েছে। তবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে শেখ মো: বানী ইয়ামিন বখতিয়ার দায়িত্ব গ্রহণের পর কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মচারীসহ সাথে আলোচনা সাপেক্ষে শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষে নিয়মিত ক্লাসসহ সকল প্রকার কার্যক্রমসহ শিক্ষার মান রক্ষায় সততা ও দায়িত্বের সাথে সঠিক ভাবে পরিচালনা করে যাচ্ছেন। সরেজমিনে গিয়ে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোহনপুর সরকারি কলেজে বর্তমানে ৫ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। শেখ মো: বানী ইয়ামিন বখতিয়ার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কলেজের শিক্ষার মান বৃদ্ধিসহ সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করছেন। শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য ছাত্রবাস সংষ্কার, কলেজের বাউন্ডারির প্রাচীন সংষ্কার, খেলাধুলার জন্য কলেজের মাঠ সংস্থারসহ কলেজ ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিছন্নতা করেছেন। তিনি কলেজের শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা সরাসরি শুনে সেটি দ্রুত সমাধান করেন। যা আগে কখনো এত দ্রুত সমাধান করা হয়নি। অফিস সময়ের বাইরেও শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে কলেজের বিষয় নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ মো: বানী ইয়ামিন বখতিয়ার এর কাছে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম ক্লাস করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন নবীন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, মোহনপুর সরকারি কলেজ নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। অভিজ্ঞ অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ পড়াশোনার সময় অতিবাহিত করতে পারব ভেবেই অনেক আনন্দ লাগছে। শিক্ষার্থীরা বলেন, উচ্চ মাধ্যমিকের পড়ালেখা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মোহনপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হতে পেরেছি এটি আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। জীবনের লক্ষ্য অর্জনে এই সময়টুকু আমাদের জন্য সহায়ক হবে এমন প্রত্যাশা করছি। অপরদিকে উচ্চ মাধ্যমিকে শ্রেণির এসব নবীন শিক্ষার্থীদের কঠোর নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার মধ্যে রাখার জন্য লিফলেটের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই বেশকিছু নির্দেশনার কথাও জানিয়েছে কলেজ কতৃপক্ষ। অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবীনসহ কলেজের সকল শিক্ষার্থীদের অবশ্যই মানতে হবে এমন ১১ টি বিষয় দৃষ্টিগোচর করা হয়েছে। সেগুলো হলো- কলেজ ইউনিফরম ও আইডি কার্ড ছাড়া কলেজে প্রবেশ করা যাবে না। ক্লাসে কমপক্ষে ৭৫% উপস্থিত না হলে কোন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে না। বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারলে দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তি এবং নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে ফরম পূরণ করতে পারবেন না। কোন অপরাধ মূলক কাজে যেমন ইভটিজিং, বুলিং, র্যাগিং, বডিশেমিং ইত্যাদি জাড়ানো যাবেনা। এ্যানড্রয়েড ফোন বা অন্য ডিভাইস নিয়ে কলেজে আসা যাবেনা। প্রয়োজনে ফিচার ফোন ব্যবহার করা যাবে। কলেজ ইউনিফরম পরিধান করে কলেজ চত্বর ব্যতিত অন্য স্থানে অহেতুক আড্ডা দেওয়া যাবেনা। বহিরাগত কোন বন্ধু-বান্ধবী নিয়ে কলেজ চত্বরে প্রবেশ করা যাবে না। কলেজের নির্দিষ্ট গ্যারেজ ছাড়া অন্য কোথায় মোটরসাইকেল রাখা যাবেনা। বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ না করলে বা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ থাকবে না এবং নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হলে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবেনা। কলেজ চলাকালীন কলেজ ক্লাস বাদ দিয়ে প্রাইভেট পড়তে যাওয়া যাবে না। উল্লিখিত নির্দেশিকার কোন শর্ত ভঙ্গ করলে কলেজ কতৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন দিবসে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, ইভটিজিং বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি)-এর একটি মোহনপুর কলেজ ইউনিট রয়েছে। এই ইউনিটি সঠিক ভাবে পরিচালনা করা হয়। সম্প্রতি বর্ধিত ফি ও অন্যান্য খাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ তুলে মোহনপুর সরকারি কলেজের অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীর এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহনপুর সরকারী কলেজর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ মো: বানী ইয়ামিন বখতিয়ার বলেন, কোন ক্রমেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একটি পয়সাও বেশী নেয়া হয়নি। প্রকৃত ঘটনা হলো, ২০২৩ সালের তুলনায় এবারে ২০২৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ১৩৫০ টাকা বেশী ধার্য করেছে। বিষয়টি না জেনে না শুনেই কয়েকজন শিক্ষার্থী মিছিলের চেষ্টা করেছে। যা নিতান্তই দুঃখজনক, অনভিপ্রেত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। আর সেশন চার্জসহ অন্যান্য খাত অপরিবর্তিত রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সম্পূর্ণ তথ্য রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ দ্বিতীয় বর্ষের ফি বাবদ ২০২৩ সালের চেয়ে এবার ২০২৪ সালে ১৩৫০ টাকা ফি (ব্যবহারিক ব্যতীত, ব্যবহারিক ভেদে বেশী হবে) বেশী ধার্য করেছে। যে কেউ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গেলে ফি সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারবেন। এছাড়াও ২০১৮ সালের বিধি মোতাবেক রাজশাহী জেলার জাতীয়করণ কলেজ গুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের তুলনায় মোহনপুর সরকারী কলেজ অনেক কম খরচে শিক্ষার্থীদের সুযোগ করে দিয়ে আসছে। বরং মোহনপুরের গর্বিত এই সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেশী ফি আদায় দুরের কথা, তুলনামূলক কম খরচে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বান্ধবের পথ সুগম করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মোহনপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ মো: বানী ইয়ামিন বখতিয়ার বলেন, কলেজটি উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর কলেজের শিক্ষার মান বৃদ্ধিসহ সকল কার্যক্রম শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার মান রক্ষায় সততা ও দায়িত্বের সাথে পরিচালনা করা হচ্ছে।