গত কয়েক মাসের অতিবৃষ্টিতে শৈলকুপার ফসলি জমি ও খানা-খন্দ পানিতে ভরে যাওয়ায় সাপের কামড় নতুন এক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে প্রতিদিনই কয়েকজন করে সাপে কাটা রোগী আসছে হাসপাতালে। অসচেতনতার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই রোগীকে হাসপাতালে না নিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে সময়মতো এন্টিভেনম প্রয়োগ করতে না পারায় রোগীর মৃত্যু ঘটছে। গত দুই সপ্তাহে শৈলকুপায় রেকর্ডসংখ্যক সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে এসেছে। তবে সরকারিভাবে এন্টিভেনম দেওয়া বন্ধ করায় সাপে রোগীরা ওঝার দিকেই ঝুঁকছেন বলেও মনে করছেন অনেকেই।
উপজেলার মাঠপাড়ার মাহতাব উদ্দিনের স্ত্রী নাসিমা বেগম (৪৫), চরধলহরা গ্রামের আলম মন্ডলের ছেলে ইমন সাপে কেটে মারা গেছে। গতকাল শৈলকুপা উপজেলার গাংকুল গ্রামের ঘুঘু বিশ্বাসের ছেলে তোয়াজ আলীকে সাপে কামড় দিলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তারের নিবিড় চিকিৎসায় এন্টিভেনমের মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তোলে। যদি সময়মতো তা না পাওয়া যেত তাহলে রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল এ ছাড়া গত ১২ জুলাই উপজেলার ব্রহ্মপুর গ্রামে অপু বিশ্বাস নামে এইচএসসি শিক্ষার্থীর সাপে কেটে মৃত্যু হয়। ওঝার কাছে নিয়ে সময় ক্ষেপণ করা ও হাসপাতালে দেরিতে আসার কারণেই এ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য এন্টি ভেনাম ভ্যাকসিনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
গত ১৯ জুলাই শৈলকুপা উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়নের কৃপালপুর গ্রামের এক নারীকে সাপে কামড়ালে তিনি সাপ ধরে নিয়েই হাসপাতালে যান চিকিৎসা নিতে। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলছেন প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগী আসছে।
ভুক্তভোগী জামিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন , এন্টিভেনমের যে দাম তাতে করে দরিদ্র রোগীদের পক্ষে কেনা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এমনিতেই মানুষকে সাপে কামড়ালে হাসপাতালে নিয়ে না এসে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া আটকানো যাচ্ছে না। তার পরে এ দামের কারণে মানুষ নিরুৎসাহ হচ্ছে। এ ব্যাপারে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর দায়িত্বরত কর্মকর্তা ডাক্তার রাশেদ আল মামুন জানান, বর্তমানে হাসপাতলে এক ডোজ এন্টিভেনাম রয়েছে। এন্টিভেনাম ভ্যাকসিনের খুব সংকট প্রতিদিনই আসছে সাপে কাটা রোগী। ইতিমধ্যে কয়েকজন বৃদ্ধশালী ব্যক্তি ও কয়েকটি মানবিক সংগঠন সাবেকাটা রোগের এন্টি ভেনাম ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছিল সেগুলো দিয়েই চলছিল। বর্তমানে হাসপাতলে এন্টি ভেনাম ভ্যাকসিনের তীব্র সংকট। চেষ্টা করছি দেখি ম্যানেজ করতে পারি কিনা।