ধুমপান মানে বিষপান। ধুমপানে মরণব্যাধি ক্যানসার ডেকে আনে। এমনি নানান ধরনের স্লোগান নিয়ে এক সময় দেশে ধুমপান নিষিদ্ধকরণের আন্দোলন শুরু হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোন সফলতা আসেনি। বর্তমানে ধুমপান মনে হয় একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। সেই ধুমপান নিষিদ্ধে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার এবার মাঠে নেমেছে। তিনি স্টেশন এলাকায় ধুমপান নিষিদ্ধকরণে সতর্কতা জারি করেছেন।
নীলফামারীর সৈয়দপুর একটি ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন। এ স্টেশনটি কোন রেলওয়ে জংশন নয়। শুধু গুরুত্বের দিক দিয়ে জংশন না হয়েও এ রেলওয়ে স্টেশন থেকে আসা যাওয়া করে ৮টি ট্রেন। হাজারো যাত্রির পদভারে মুখর থাকে রেল স্টেশনটি। দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং কতিপয় অর্থলোভী ট্রেনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার কারণে এক সময় সৈয়দপুর থেকে চলাচলকারি ট্রেনে চোরাই মালামাল আসতো ভারত থেকে। নারী পুরুষ ব্ল্যাকারদের কারণে ওই সময় সাধারণ যাত্রীরা ট্রেনে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাত। একদিকে ট্রেনের টিকেট আগেই চলে যেত ব্ল্যাকারদের হাতে অন্যপাশে টিকেট না পেয়ে সাধারণ ট্রেন যাত্রীরা যেতে পারতেন না তার গন্তব্যে।
তাছাড়া কোন কোন সময় এ রেলওয়ে স্টেশনে ঘটতো চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা। সে সময় বিভিন্ন অনিয়মের আখড়া ছিল এ রেলওয়ে স্টেশনটি। অবশেষে গনমাধ্যমকর্মীরা ওই অনিয়মগুলো তুলে ধরেন বিভিন্ন গনমাধ্যমে। ফলে শুরু হয় প্রশাসনের এ্যাকশন। পুলিশ,বিজিপি এবং যৌথবাহিনী ট্রেনে চালায় অভিযান। চোরাই পথে নিয়ে আসা ভারতীয় বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়। জড়িতদের করা হয় গ্রেফতার। এদের বিরুদ্ধে হয় মামলা। অনেকে বসবাস করে জেলহাজতে।
আজ সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনটি হয়েছে মাদক ও ব্ল্যাকারমুক্ত। এখন আর ট্রেনে ব্ল্যাকার নেই। নেই হিজড়াদের দাপট। টিকেট কালোবাজারী এখন চোখে পড়ে না। বর্তমানে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের। তবে দ্বিতীয় প্লাটফর্মটি যেন যাত্রীদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। এখন সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনটি দেখতে ঝকঝকে চকচকে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কোন কমতি নেই। যাত্রীদের বিশ্রাগারে এখন আর নাকে আসে না বাথরুমের গন্ধ।
২১ সেপ্টেম্বর একটি সুন্দর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। তবে এটি আগে থেকেই সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ছিল। প্রকাশ্যে কেউ ধুমপান করতে পারবে না। যদি কেউ করে তার শাস্তি স্বরুপ জরিমানা ছিল ৫০ টাকা। ক্রমান্বয়ে ধুমপানের বিষয়টি এড়িয়ে চলে প্রশাসন। ফলে সরকারি উদ্যোগ ভেস্তে যায়।দেরিতে হলেও ধুমপান নিয়ে একটি ভাল উদ্যোগ গ্রহণ করেন সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোঃ ওবাইদুল হক রতন।
তিনি রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে ধুমপান নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। যার ফলে এখন রেল স্টেশন এলাকাটি হবে ধুমপান মুক্ত এলাকা। যাত্রীরা যাতে স্টেশন এলাকায় ধুমপান না করে সেজন্য তিনি প্লাটফর্মের বিভিন্ন স্থানে সচেতনতা স্বরুপ স্টিকার ও ব্যানার টাঙ্গিয়ে দেন। তার এ কাজে সহযোগিতা করেন সৈয়দপুর হেড বুকিং,সৈয়দপুর টিসি, সৈয়দপুর পয়েন্টসম্যান এবং রেলওয়ে জিআরপি থানার পুলিশ সদস্যগন। স্টেশন মাস্টার রতনের এমন কাজে সাধুবাদ জানান সাধারণ ট্রেন যাত্রীরা।