জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মানহানিকর ও মিথ্যা বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ইসলামী বক্তা ও জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মুফতি আমির হামজাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, সিনেট সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। কুষ্টিয়ার গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো এই নোটিশে বলা হয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাবেক শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইবেন। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালতে মামলা করা হবে।
নোটিশে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও অনলাইন ভিডিওর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, আমির হামজা নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী দাবি করেছেন। এছাড়া তিনি ওয়াজ মাহফিলে বলেন, আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা সকালে ‘মদ’ দিয়ে কুলি করে এবং ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে মারধর করে। ব্যারিস্টার শিহাবের মতে, এসব বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, অবমাননাকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এ অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে এসব মন্তব্যে তার ব্যক্তিগত অনুভূতিও আহত হয়েছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমির হামজার দাবি খণ্ডন করেছে। সেখানে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ চালু হয় ২০১১ সালে এবং ওই বছরেই প্রথম ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। সুতরাং তিনি এই বিভাগে পড়াশোনা করেছেন—এ দাবি ভিত্তিহীন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্কে দেওয়া তার বক্তব্যকেও মনগড়া ও অপপ্রচার আখ্যা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আইনি নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে কেবল ফৌজদারি মামলা নয়, ক্ষতিপূরণ আদায়ের দেওয়ানি মামলাও করা হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে যেন উক্ত বক্তব্য সম্বলিত ভিডিও দ্রুত ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
উল্লেখ্য, ওয়াজের নামে উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে আমির হামজা ২০২১ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং ২০২৩ সালের ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান। গণঅভ্যুত্থানের পর জামায়াত ঘনিষ্ঠ রাজনীতির সঙ্গে তার নতুন করে সম্পৃক্ততার খবর সামনে আসে।