জলবায়ু-সহনশীল আবাসনে সহায়তার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই ও স্বল্পমূল্যের আবাসন তৈরি এখন জরুরি হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের আবাসন সংস্থা ইউএন-হ্যাবিট্যাটের নির্বাহী পরিচালক আনাক্লাউদিয়া রসব্যাকের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতি বছর বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও নদীভাঙনে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ছে। তাদের জন্য বহুমুখী ও প্রেক্ষিতভিত্তিক আবাসন মডেল তৈরি করা প্রয়োজন। তিনি উদ্ভাবনী নকশার প্রস্তাব দিয়ে বলেন, ছাদের নকশা এমনভাবে করা যেতে পারে যাতে বন্যার সময় তা নৌকার মতো ব্যবহার করা যায়।

বৈঠকে দ্রুত নগরায়ণ, সাশ্রয়ী আবাসন, ক্ষুদ্রঋণভিত্তিক উদ্যোগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়। নারীবান্ধব আবাসনের গুরুত্ব উল্লেখ করে ইউনূস বলেন, নকশা তৈরির সময় অবশ্যই নারীদের প্রয়োজন ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে সহজ করার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার জন্য টেকসই আবাসন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন প্রধান উপদেষ্টা। এ প্রসঙ্গে তিনি ইউএন-হ্যাবিট্যাটকে নিউইয়র্কে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য রোহিঙ্গা সংকটবিষয়ক জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা প্রস্তাব করেন, ইউএন-হ্যাবিট্যাটের বিশ্ব নগর ফোরামের মাধ্যমে প্রতিবছর জলবায়ু-সহনশীল ও সাশ্রয়ী আবাসন নকশা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে। রসব্যাক এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। তিনি জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং রোহিঙ্গা সংকট সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পায়। জাতিসংঘ মহাসচিবের জিরো ওয়েস্ট উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে ইউনূস শহর ও বস্তিতে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। রসব্যাকও আবাসন উন্নয়ন, উন্নত নগর পরিকল্পনা এবং ক্ষুদ্রঋণ সংযোজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এ সময় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।