পাবনার চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের সমাজ দক্ষিণপাড়া গ্রামে ওয়ারিশদেরকে ফাঁকি দিয়ে জমি আত্মসাতের অপচেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য তৈরি করা হয়েছে ভুয়া ওয়রিশ সনদ।
অভিযোগে জানা গেছে,নিমাইচড়া ইউনিয়নের সমাজ দক্ষিনপাড়া গ্রামের মৃত নন্দ প্রামানিকের দুই ছেলে ও ২ মেয়ে ছিলো। ছেলেরা হলেন নুর বক্স প্রামানিক ও কানু প্রামানিক,মেয়োরা হলেন জবেদা থাতুন ও আমেনা খাতুন। নন্দ প্রামানিক,তার স্ত্রী,২ ছেলে ও ২ মেয়ে মারা গেছেন। এরপর তাদের ওয়ারিশগণ স্থাপব অস্থাবর সম্পত্তির মালিক হন। কিন্তু নুর বক্স প্রামানিকের ছেলে ও নাতীরা কানু প্রামানিক নন্দ প্রামানিকের ছেলে নয় বলে প্রচার করেন। তারা বলেন কানু প্রামানিক নন্দ প্রামানিকের স্ত্রীর দত্তক নেওয়া সন্তান। নন্দ প্রামানিকের ওয়ারিশ কানু প্রামানিক নন। এ অবস্থায় নুর বক্স প্রামানিকের নাতী নিমাইচড়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বর আঃ ওয়াহাব ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়নের প্রশাসকদের ভুল বুঝিয়ে ও বিশেষ সুবিধা প্রদান করে কানু প্রামানিক নন্দ প্রামানিকের ছেলে নন মর্মে একাধিক ওয়ারিশ সনদ ও প্রত্যায়নপত্র গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ। কানু প্রামানিকের জমি তার ওয়ারিশদের বুঝে না দিয়ে তা আত্মসাত করার জন্য অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কানু প্রামানিক যে নন্দ প্রামানিকের ছেলে এ মর্মে নিমাইচড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ এম কামরুজ্জামান খোকন ওয়ারিশ সনদ প্রদান করেন। কিন্তু পরবর্তীতে অজ্ঞাত কারণে সেই চেয়ারম্যানই ওয়ারিশ সনদ ও প্রত্যায়ন দেন যে,কানু নন্দ প্রামানিকের ছেলে নন। এরপর নিমাইচড়া ইউনিয়নের আরেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরজাহান বেগম মুক্তিও কানু প্রামানিক নন্দ প্রামানিকের ছেলে নন মর্মে প্রত্যায়ন ও ওয়ারিশ সনদ প্রদান করেন। সর্বশেষ নিমাইচড়া ইউনিয়নের প্রশাসক ও উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক খলিলুর রহমান,ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা আঃ আউয়াল কানু প্রামানিক নন্দ প্রামানিকের ছেলে নন বলে ওয়ারিশ সনদ প্রদান করে বিতর্ক আরো উস্কে দেন। কানু প্রামানিকের ছেলে জায়দার প্রামানিক এসকল ওয়ারিশ সনদকে ভুয়া বলে দাবি করেছেন। তিনি সঠিক তদন্ত পূর্বক ভুয়া ওয়ারিশ সনদ বাতিল করে প্রকৃত সনদ প্রদান ও এ ঘটানার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেছেন। জায়দার প্রামানিক গং জানান,এ বিষয়ে আদালতে মামলাও রয়েছে। তাদের অভিযোগ আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে ও নুর বক্সের নাতী আঃ ওয়াহাব ইউপি সদস্য হওয়ায় তার প্রভাবে আওয়ামী লীগের দুই নেতা ও প্রশাসক এসব ভুয়া ওয়ারিশ সনদের জন্ম দিয়েছেন।
এ বিষয়ে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মোঃ খলিলুর রহমান বলেন,‘বিষয়টি জটিল। ইউপি সদস্য তদন্ত করে প্রথমে প্রতিবেদন দেন,এরপর আমরা ওয়ারিশ সনদ দিয়ে থাকি। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। আমরা প্রাথমিক সনদ দিয়েছি,তারা এর বিরুদ্ধে উপরে আবেদন করতে পারেন। তদন্তে যেটা সত্য হবে,সে অনুযায়ী তারা ওারিশ সনদ পেতে পারেন।
এলাকার বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা যায়,কানু প্রামানিক নন্দ প্রামানিকের ছেলে। এখন এতো বছর পর নুর বক্সের ছেলে ও নাতীরা কানুর ওয়ারিশদের সম্পত্তি না দেওয়ার জন্যই এ ধরণের অভিযোগ তুলেছেন। তারা মূলত সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য এ অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের পক্ষের লোকজনই কেবল বলছে কানু নন্দ প্রামানিকের ছেলে নয়। গোটা এলাকার লোক জানেন কানু প্রামানিক নন্দ প্রামানিকের ছেলে। এজন্য তদন্ত করে সঠিক বিষয় যাচাই করা দরকার বলে এলাকাবাসীর অভিমত।