হাতিয়ায় যৌথবাহিনীর সহায়তায় সনাতনীদের দেবী বিসর্জন

এফএনএস (জি এম ইব্রাহীম; হাতিয়া, নোয়াখালী) : | প্রকাশ: ২ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:২০ পিএম
হাতিয়ায় যৌথবাহিনীর সহায়তায় সনাতনীদের দেবী বিসর্জন

নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্ন হয়েছে। পূজা মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন  রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের,  নৌবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দিন-রাত কাজ করেছে। বৃহস্পতিবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহ প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় শারদীয় দুর্গোৎসব।

হাতিয়ায়  মোট ৩৩টি পূজা মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়। দেবীর বিসর্জনকে ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, যাতে ভক্তবৃন্দ নির্বিঘ্নে ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করতে পারে। প্রতিটি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা, পাহারাদার এবং পুলিশের মোবাইল টিম নিয়োজিত ছিল। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত মনিটরিং ছিল চোখে পড়ার মত। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার জন্য গঠিত টিম ছিল সক্রিয়।   ফলে এ বছর কোনো ধরণের অশান্তি বা অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা জানান, বিগত কয়েক বছরে নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছুটা উদ্বেগ ছিল। তবে এ বছর যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় সবার মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছিল। পূজায় আগত হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তরা আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী পূজা সম্পন্ন করতে পারায় উপজেলা প্রশাসন ও যৌথবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।

অন্যদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল জানান, হাতিয়া একটি বহু ধর্মাবলম্বীর দ্বীপ। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ঐতিহ্যগতভাবে বজায় আছে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে মুসলিম, হিন্দুসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষ একে অপরকে সহযোগিতা করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনে প্রশাসন ও যৌথবাহিনীর পাশাপাশি বিএনপি, এনসিপি ও জামাতে ইসলামী সহ রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার জন্য টিম  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ফলে এ বছর হাতিয়ায় দুর্গাপূজা সত্যিকারের ধর্মীয় সৌহার্দ্য ও মিলনের উৎসবে পরিণত হয়েছে।  

নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট হাতিয়া লেঃ সোয়েব রাফসান জানান, সারা দেশের ন্যায় হাতিয়া নৌবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উৎসব পালনে সার্বক্ষণিক বিশেষ টহল অব্যাহত রেখেছে। ফলে এখানে অসাধু ও সুযোগ সন্ধানীরা কোন প্রকার অপ্রীতিকর তৎপরতা দেখাতে সাহস করতে পারে নাই। হাতিয়ায় শান্তি রক্ষার্থে নৌবাহিনী সর্বদা সজাগ রয়েছে।  

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় প্রশাসন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। যৌথবাহিনীর টহল ও পাহারার কারণে কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পূজা উদযাপন করতে পেরেছে।’

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে