পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ঈদগাহের নামকরণ নিয়ে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। ভাঙ্চুর করা হয়েছে ঘরবাড়ি। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলংকা ও বন্যাগাড়ী গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত আহতরা হলেন, উপজেলার বন্যাগাড়ী গ্রামের আজিম উদ্দিন,সুরমান আলী,আরমান আলী,আবুল হোসেন,রাশেদ হোসেন,আফজাল প্রামাণিক,সেলিম হোসেন ও সাব্বির হোসেন। আহত কয়েকজনকে পার্শ্ববর্তী আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাদের নাম পাওয়া যায়নি।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন,‘‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মূলত ঈদগাহ মাঠের নামকরণ করা নিয়ে আটলংকা ও বন্যাগাড়ী গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তিনি জানান,শনিবার (৪ অক্টোবর) বন্যাগাড়ী গ্রামের পক্ষে আটলংকা গ্রামের বেশ কিছু লোকজনের নামে থানায় মামলা করা হয়েছে। অপরপক্ষও মামলা করবে বলে শুনেছি। অভিযোগের তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ঈদগাহের নামকরণ করা নিয়ে আটলংকা ও বন্যাগাড়ী গ্রামের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। গত ঈদে দুই গ্রামের লোকজন পুলিশের উপস্থিতিতে পৃথকভাবে ঈদের নামাজ আদায় করেন। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার থানায় ও স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য দুই গ্রামের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা বসেন। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। এরপর থেকে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে আটলংকা ঈদগাহ মাঠ নামে নামফলক লাগানো নিয়ে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ লাঠিসোঁটা ও দেশীয় নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরী,থানার ওসি মনজুরুল আলমসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর উভয় পক্ষের আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আটলংকা বাজারের পাশে অবস্থিত ঈদগাহ মাঠটি দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে বন্যাগাড়ী ও আটলংকা গ্রামের মানুষ একসঙ্গে ব্যবহার করে আসছেন। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর আটলংকা গ্রামের মানুষ ঈদগাহ মাঠটি নিজেদের দাবি করে এবং নামকরণ তাদের গ্রামের নামে ‘আটলংকা ঈদগাহ মাঠ’ করার চেষ্টা করে। এতে বন্যাগাড়ী গ্রামের মানুষ তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়। বন্যাগাড়ী গ্রামের মানুষের দাবি,যেহেতু ঈদগাহ মাঠটি পূর্বপুরুষ থেকে একসঙ্গে ব্যবহার হয়ে আসছে,তাই নাম দিতে হলে দুই গ্রামের নামে ‘আটলংকা-বন্যাগাড়ী ঈদগাহ মাঠ’ করতে হবে। কিন্তু আটলংকাবাসী তা মানতে নারাজ।