ঈদগাহের নামকরণ নিয়ে দুই গ্রামবাসীর উত্তেজনা, ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা

এফএনএস (হেলালুর রহমান জুয়েল; চাটমোহর, পাবনা) : | প্রকাশ: ৫ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:৩৭ পিএম
ঈদগাহের নামকরণ নিয়ে দুই গ্রামবাসীর উত্তেজনা, ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ঈদগাহের নামকরণ নিয়ে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর এখনো উত্তেজনা চলছে। এনিয়ে যে কোন মূহুর্তে আবারো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে গত শুক্রবারের (৩ অক্টোবর) সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। এসময় এক পক্ষ অপর পক্ষের বাড়ি ঘরে হামলা করে ভাঙ্চুর করে। শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেল ও সন্ধ্যায় উভয় পক্ষই থানায় পৃথক দুইটি মামলা করেছে। ভাঙ্চুর করা হয়েছে ঘরবাড়ি। উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলংকা ও বন্যাগাড়ী গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন,‘‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মূলত ঈদগাহ মাঠের নামকরণ করা নিয়ে আটলংকা ও বন্যাগাড়ী গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। ঈদগাহ মাঠটি সরকারি জায়গায় অবস্থিত। তিনি জানান,শনিবার (৪ অক্টোবর) উভয় পক্ষ থানায় পৃথক দুইটি মামলা করেছে। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ঈদগাহের নামকরণ করা নিয়ে আটলংকা ও বন্যাগাড়ী গ্রামের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। গত ঈদে দুই গ্রামের লোকজন পুলিশের উপস্থিতিতে পৃথকভাবে ঈদের নামাজ আদায় করেন। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার থানায় ও স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য দুই গ্রামের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা বসেন। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। এরপর থেকে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। 

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে আটলংকা ঈদগাহ মাঠ নামে নামফলক লাগানো নিয়ে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ লাঠিসোঁটা ও দেশীয় নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আটলংকা গ্রামের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে বন্যাগাড়ি গ্রামের হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে।

আটলংকা বাজারের পাশে অবস্থিত ঈদগাহ মাঠটি দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে বন্যাগাড়ী ও আটলংকা গ্রামের মানুষ ব্যবহার করে আসছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর আটলংকা গ্রামের মানুষ ঈদগাহ মাঠটি নিজেদের দাবি করে এবং নামকরণ তাদের গ্রামের নামে ‘আটলংকা ঈদগাহ মাঠ’ করার চেষ্টা করে। এতে বন্যাগাড়ী গ্রামের মানুষ তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়। বন্যাগাড়ী গ্রামের মানুষের দাবি,যেহেতু ঈদগাহ মাঠটি পূর্বপুরুষ থেকে একসঙ্গে ব্যবহার হয়ে আসছে,তাই নাম দিতে হলে দুই গ্রামের নামে ‘আটলংকা-বন্যাগাড়ী ঈদগাহ মাঠ’ করতে হবে। কিন্তু আটলংকাবাসী তা মানতে নারাজ।  এ দ্বন্দ্ব নিরসনে কয়েক দফা বৈঠক হলেও,সমাধান হয়নি। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুরুল আলম বলেন,আটলংকা গ্রামের নেতৃবৃন্দের সদিচ্ছা থাকলে এ সমস্যা থাকবেনা। আমরা আবারো বসার কথা বলেছি। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে