বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে এখন তিনটি বিদেশি শক্তি প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি দাবি করেন, এই তিন শক্তির মধ্যে দুটি আঞ্চলিক এবং একটি বিশ্বমোড়ল; তাদের স্বার্থ ভিন্ন হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রদল এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকেই বিদেশি শক্তিগুলো এই অঞ্চলে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় একটি মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণি তৈরি করেছে। সেই ঐতিহাসিক প্রভাব এখনো বিদ্যমান। শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং রাজনীতির বিভিন্ন পরিসরে বিদেশি আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চলছে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বার্থের পরিপন্থী।
তিনি বলেন, “আজ দেশে দুটি আঞ্চলিক শক্তি এবং একটি বিশ্বমোড়ল নিজেদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এদের স্বার্থ এক নয়, কিন্তু এদের প্রতিযোগিতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের স্বার্থ। আমাদের সবার সতর্ক থাকতে হবে।”
আবরার ফাহাদের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলার অপরাধে আবরারকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই হত্যাকাণ্ড ছিল সতর্কবার্তা—যেন কেউ আর বিদেশি আগ্রাসন বা আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে মুখ না খোলে।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার বিদেশি শক্তির কুশীলব হিসেবে কাজ করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিদেশি প্রভাবের কাছে দেশকে নতজানু করে দিয়েছে। সালাহউদ্দিনের ভাষায়, “এই লেজুড়বৃত্তি নেতৃত্বের কারণেই পরাশক্তিগুলো রাজনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারছে।”
আলোচনা সভায় সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম কোনো একদিনে শুরু হয়নি। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন, ত্যাগ ও সংগ্রামের ফসল ছিল মুক্তিযুদ্ধ। “২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানও সেই ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতারই অংশ—যেখানে শহিদ আবরারের মতো তরুণদের আত্মত্যাগ আমাদের আন্দোলনের নতুন সিঁড়ি নির্মাণ করেছে।”
তিনি আহ্বান জানান, সবাইকে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নীতিতে একত্রিত হতে হবে। শিক্ষা, রাজনীতি, ও গণমাধ্যমে বিদেশি প্রভাবের বিরোধিতা করে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।