গজারিয়ায় শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা-লুটপাট,আহত ১০

এফএনএস (মোঃ আমিরুল ইসলাম নয়ন; গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ) :
| আপডেট: ১০ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম | প্রকাশ: ১০ অক্টোবর, ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম
গজারিয়ায় শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা-লুটপাট,আহত ১০

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুদের জেরে প্রতিপক্ষের বাড়ি-ঘরে হামলা এবং লুটপাটের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় নারীসহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার ( ৯ অক্টোবর)  দিবাগত রাত তিনটার দিকে গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর ও বালুয়াকান্দি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে ৭জনের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলো, নুরজাহান (৭০), রিনা (৪০) ও মনিকা (৩০), শিউলি (৩৫), কামরুন নাহার (৪০), পিংকি (৩১), ছফিরুন (৫৬)। তারা সবাই নয়ন-পিয়াসের স্বজন বলে জানা গেছে।

হামলায় আহত নুরজাহান বলেন, ' বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। রাত সাড়ে তিনটার দিকে ২০/২৫জন সন্ত্রাসী আমাদের উঠোনে এসে হৈ চৈ করতে থাকলে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। হামলাকারীদের কয়েকজন দরজা ভেঙে আমাদের ঘরে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে থাকে। যাবার সময় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ সহ কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। হামলাকারীরা আমাদের চারটি ঘরসহ ৮টি বসতঘরে ভাঙচুর চালায়'।

হামলায় আহত রিনা বেগম বলেন, ' হামলাকারীদের মধ্যে কুদ্দুস,  সাব্বির রাঢ়ী ও জিহাদ রাঢ়ীকে চিনতে পেরেছি আমি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তারা আমাকে লক্ষ্য করে কুপ দেয় আমি সরে গেলে সেটি আমার কপালে লাগে। আমাদের বাড়ি ঘরের ব্যাপক ভাঙচুরা ও লুটপাট চালানো হয়েছে'।

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নাফিস আহমেদ বলেন, ' এই ঘটনায় আমাদের হাসপাতালে তিনজন রোগী আসে। তাদের সবাইকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখা হয়েছে। আহতদের মধ্যে রিনার কপালে জখম রয়েছে। নুরজাহান বেগমের বাম হাত এবং বাম পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে'।

বিষয়টি সম্পর্কে অপর পক্ষের জিয়াউল জিতু রাঢ়ি বলেন, ' ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না।  আমার কোন সমর্থক এ কাজের সাথে জড়িত নয়। নৌ ডাকাত-নয়ন পিয়াস পালিয়ে যাবার পরপর স্থানীয় লোকজন একজোট হয়ে তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছিল। নতুন করে কোন ঝামেলা হয়নি। তারা এখন এলাকায় ফিরতে চায় সেজন্য নাটক সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।  আমাদের নামে মামলা করে তারা আমাদের এলাকা ছাড়া করতে চায়'।

সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ' স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপনাদের বিস্তারিত পরে জানাবো'।

প্রসঙ্গতঃ গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নে নৌ ডাকাতদের অপতৎপরতা কমাতে চলতি বছরের গত ২২ আগস্ট ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। ক্যাম্প চালু হবার পর ২৫ আগস্ট অস্থায়ী ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে পুলিশকে লক্ষ্য করে শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা। এ ঘটনায় মামলা দায়ের এর পর থেকে নয়ন পিয়াস গ্রুপের লোকজন আত্মগোপনে চলে গেলেও তাদের প্রতিপক্ষ জিয়াউল হক জিতুর রাঢ়ি সম্প্রতি এলাকায় ফিরে আধিপত্য বিস্তারিত চেষ্টা করছে। জিতু রাঢ়ি সমর্থকদের হুমকিতে নয়ন-পিয়াসের গ্রুপের অন্তত শতাধিত মানুষ গ্রাম ছাড়া বলে জানা গেছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে