ধর্ষণের সাজানো ও হয়রানিমূলক অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সানোয়ার হোসেন সংবাদ সম্মেলন করেছেন। শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কমলগঞ্জ ইউনিটের শমশেরনগরস্থ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
লিখিত বক্তব্যে ইউপি সদস্য মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, তার সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমে ঈর্ষান্বিত হয়ে স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি জানান, ইউপি নির্বাচনের পর থেকে গ্রাম্য সালিশ-বৈঠকে অংশগ্রহণ ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারণে একটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে।
সানোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন, রাধানগর গ্রামের মো. মোশাহিদ মিয়ার মেয়ে তাসনীয়া আক্তার সাথী (১৮)-কে ব্যবহার করে টাকা লেনদেনের মাধ্যমে একটি সাজানো ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিডিওতে বলা হয়েছে, ইউপি সদস্য তাকে ধর্ষণ করেছেন এবং মেয়েটি বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা। ওই ভিডিওটি বিভিন্ন ফেসবুক আইডিতে ছড়িয়ে ভাইরাল করা হয়।
তিনি আরও জানান, মিথ্যা ও বানোয়াট ওই ভিডিও প্রচারের ঘটনায় তিনি শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন, যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়া মোশাহিদ মিয়া ও অজ্ঞাত কয়েকজন তার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সানোয়ার হোসেন বলেন, এসব অপতৎপরতার কারণে তার পরিবারের সদস্যরাও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সন্তানরা বিদ্যালয়ে গেলে সহপাঠী ও স্থানীয়দের কাছ থেকে কটূক্তি শুনতে হচ্ছে, যা তাদের মানসিকভাবে আঘাত করছে।
তিনি গত ৯ অক্টোবর কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এবং রাষ্ট্রীয় আইন ও প্রযুক্তিগত তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে অভিযোগের পক্ষ মোশাহিদ মিয়া ও তার মেয়ে তাসনীয়া আক্তারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শমশেরনগর ইউনিয়নের সমুজ আলী, রুহুল আমীন মিয়া, আখির মিয়া, জহির মিয়া প্রমুখ।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, দু'পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় একজন মেডিকেল অফিসারসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জাফর মো: মাহফুজুল কবির বলেন, ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেনসহ অপর পক্ষের অভিযোগও পেয়েছি। এ ঘটনা তদন্তের জন্য শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।