২০৩০ সালের মধ্যে এলপিজি দ্বিগুণ আমদানি করা হবে: বিইআরসি চেয়ারম্যান

এফএনএস অনলাইন: | প্রকাশ: ১১ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:৫২ পিএম
২০৩০ সালের মধ্যে এলপিজি দ্বিগুণ আমদানি করা হবে: বিইআরসি চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ শনিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে দৈনিক বণিক বার্তা আয়োজিত ‘বাংলাদেশে এলপিজি : অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বললেন, “বর্তমানে বাংলাদেশ বছরে প্রায় ১.২ মিলিয়ন টন এলপিজি আমদানি করে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এই পরিমাণ প্রায় ২.৫ মিলিয়ন টন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এই বর্ধিত চাহিদা বিদেশি জ্বালানির নিরাপত্তা এবং অর্থপ্রবাহের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এলপিজি খাতে নতুন বিনিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও সাশ্রয়ী পরিবহন ব্যবস্থার গঠন অপরিহার্য।”

জালাল আহমেদ বলেন, “মাতারবাড়ি টার্মিনালের অবকাঠামো উন্নত হলে এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সরবরাহ ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। এতে বড় আকারের জাহাজ ভিড়তে পারবে, পরিবহন খরচ কমবে এবং শেষ পর্যন্ত ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের দামও স্থিতিশীল থাকবে। এলপিজি খাতের দক্ষতা বাড়াতে অবকাঠামোগত বিনিয়োগ এখন সময়ের দাবি, যা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ, জ্বালানি সেক্টর যেকোনো দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন জ্বালানির সুষ্ঠু ব্যবহার ও সম্প্রসারণের ওপর নির্ভর করে।”

‘বাংলাদেশের মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার এখনও উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। উন্নত রাষ্ট্রের পর্যায়ে যেতে হলে বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ ও জ্বালানি ব্যবহার উভয়ই বাড়াতে হবে। তবে এটি চ্যালেঞ্জপূর্ণ কাজ, কারণ দেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত কমে যাচ্ছে। ফলে, আমদানি নির্ভর এলএনজির ওপর নির্ভরতা বাড়ছে, যার ফলে এলপিজি খাতের গুরুত্ব আরও বেড়ে যাচ্ছে’-উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “মাতারবাড়ি এলপিজি টার্মিনাল পরিদর্শনকালে তিনি জানতে পারেন, যদি মাদার ভেসেল ও মিডিয়াম ভেসেলগুলোর জন্য নোঙর ব্যবস্থা উন্নয়ন করা যায়, তাহলে খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এটি দীর্ঘমেয়াদে এলপিজি খাতকে আরও কার্যকর ও সাশ্রয়ী করবে।”

রেগুলেটর হিসেবে বিইআরসি লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ করা, অপারেটরদের দিকনির্দেশনা দেওয়া এবং সেফটি ও সিকিউরিটি বিষয়ক তদারকি বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে অপারেটরদের ৩৩টি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে এবং ৫০টি ইনস্টলেশন লাইসেন্স অধীন রয়েছে। তবে রিটেইল ডিস্ট্রিবিউটরদেরও লাইসেন্স নেওয়া আবশ্যক হবে। পাশাপাশি, বাণিজ্যিক ও ভোক্তা পর্যায়ে নিরাপদ এলপিজি ব্যবহারের সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

দাম নির্ধারণ প্রসঙ্গে জালাল আহমেদ বলেন, এলপিজি মূল্যের ক্ষেত্রে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় আসে - এক হচ্ছে এক্সচেঞ্জ রেট এবং অন্যটি হলো সৌদি থেকে আমদানির কনট্রাক্ট প্রাইস। এই দুইয়ের ওঠা-নামার কারণে মূল্য নির্ধারণ জটিল হয়ে ওঠে। 

ভোক্তার উপর যেন চাপ না পড়ে সেজন্য ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া এডমিন কস্ট (প্রশাসনিক খরচ) বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন বিইআরসি চেয়ারম্যান।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে