দেশের শিশুদের টাইফয়েড রোগ থেকে রক্ষা করতে আজ রোববার (১২ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে দেশের প্রথম জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এক মাসব্যাপী এই কর্মসূচিতে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে বিনামূল্যে ইনজেকটেবল টাইফয়েড টিকা (TCV) দেওয়া হবে।
প্রথম ধাপের উদ্বোধন হবে সকাল ৯টায় রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায়, যেখানে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে উদ্বোধন করবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। ভিকারুন্নিসা নুন স্কুলে উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ক্যাম্পেইনের আওতায় অন্তত ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জন্মসনদবিহীন শিশুরাও এই টিকার আওতায় থাকবে। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) প্রোগ্রামের ম্যানেজার ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান জানিয়েছেন, প্রথম ১০ দিন স্কুল ও মাদ্রাসায় টিকাদান হবে, পরবর্তী ৮ দিন ইপিআই সেন্টারে কার্যক্রম চলবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশে ব্যবহৃত এই টিকাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত, নিরাপদ এবং ইতোমধ্যেই নেপাল, পাকিস্তানসহ আটটি দেশে সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।” এই টিকাটি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে এবং গ্যাভির সহযোগিতায় সরকার টিকা পেয়েছে।
টিকাদান কর্মসূচির আওতায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ স্কুল বা মাদরাসায় এক ডোজ টাইফয়েড টিকা পাবেন। যারা স্কুলে ভর্তি হয়নি, তারা নির্দিষ্ট টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে পারবে। শহরের পথশিশুদের জন্য দায়িত্বে থাকবে বিভিন্ন এনজিও।
টিকা গ্রহণের জন্য অভিভাবকদের https://vaxepi.gov.bd/registration/tcv ওয়েবসাইটে ১৭ সংখ্যার জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে শিশুদের নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন শেষে সেই নম্বর ব্যবহার করে ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করা যাবে।
চিকিৎসকরা অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন, শিশুরা টিকা নেওয়ার আগে ভালোভাবে খাওয়ানো নিশ্চিত করতে। অধ্যাপক সায়েদুর রহমান আরও জানান, টাইফয়েড শিশুদের উচ্চ মৃত্যুহারের একটি প্রধান কারণ। এই জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি মাল্টি-ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টাইফয়েড সংক্রমণ ও মৃত্যু কমাতে সহায়ক হবে।