গাজীপুরের কাপাসিয়ায় অনুমোদনহীন মিনি পেট্রোল পাম্পে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত মোহাম্মদ ফারুক (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে থানা পুলিশ গ্রেফতার করে ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার জেল হাজতে পাঠিয়েছে। সে নয়ানগর গ্রামের মৃত হাছেন আলীর পুত্র। জানা যায়, উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের গিয়াসপুর- আমরাইদ বাজার সড়কে অবস্থিত মোতাহার হোসেনের মালিকানাধীন জম জম মিনি পেট্রোল দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেছে। খবর পেয়ে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ সোমবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে ওই পাম্পে অভিযান চালায়। এর আগে তারা কাপাসিয়া ও কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন অনুমোদনহীন অবৈধ পেট্রোল পাম্পে অভিযান পরিচালনা করেন। এতে গাজীপুর জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিমন সরকার নেতৃত্ব দেন। এসময় অভিযানে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো ও বিস্ফোরক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এছাড়া অভিযানে অংশ নেন বিস্ফোরক পরিদপ্তরের সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক মোহাম্মদ ইশরাক উদ্দিন, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম, পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি মো. সালাউদ্দিন, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের উপব্যবস্থাপক মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের মার্কেটিং বিভাগের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বদরুল ইসলাম। অভিযান চলাকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পেট্রোল পাম্পটির বৈধতা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। এসময় মালিক পক্ষ তাদের বৈধতার সপক্ষে অনুমোদন বা লাইসেন্স দেখাতে পারেন নি। পরে তেলের মান পরীক্ষায় নিম্নমানের তেল পাওয়া গেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নমুনা সংগ্রহ করেন এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এ সময় পাম্প মালিক মোতাহার হোসেন ও তার ভাই ও মোহাম্মদ ফারুক ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে তেলের নমুনা সংগ্রহে আপত্তি জানান। তাদের উস্কানিতে কিছু লোক ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করে এবং একপর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িবহরে হামলা চালায়। এতে একটি মাইক্রোবাসের কাঁচ ভেঙে যায় এবং আরেকটি গাড়িতে দা দিয়ে আঘাত করা হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে সমন্বয় করে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন। পরে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি ঘটনাস্থল থেকে কিছু নথি, মালামাল ও নগদ টাকা জব্দ করেন এবং মোহাম্মদ ফারুককে গ্রেফতার করেন। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা যায়।