নেছারাবাদে পাষন্ড ছেলে ও পুত্রবধূর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণে বাঁচতে বাড়ী ছাড়া হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন এক অসহায় বৃদ্ধ দম্পত্তি। নির্যাতনের শিকার পিতা মাতা হলেন মো: শাহাদাৎ হোসেন (৬০) এবং স্ত্রী মোসাৎ : মমতাজ বেগম। ওই বৃদ্ধ দম্পত্তির অভিযোগ তার বড় ছেলে মো: মিলন কৌশলে তাদের অর্ধেকের বেশি জমি লিখে নিয়ে এখন তাদের কোন ভরন পোষন দিচ্ছেনা। বর্তমানে ওই বৃদ্ধ মা বাবাকে মেরে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় নিরুপায় হয়ে নেছারাবাদ থানায় ওই ছেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েও এখনো কোন বিচার পাচ্ছেনা তারা।
অভিযোগে ওই দম্পত্তির স্বামী অসহায় বৃদ্ধ মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান, তার তিন ছেলে। বড় ছেলের নাম মো: মিলন। তার ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ছেলে মিলনের কাছে কিছু টাকা নিয়েছিলেন। বিনিময়ে ছেলে কৌশলে ২২ কাঠা জমি লিখে নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা বাড়ী থেকে বাগানের কিছু সুপাড়ি পাড়ায় ছেলে মিলন ও পুত্রবধূ রুবি বেগম মিলে আমাদের মারধর করে। তাদের বেদম প্রহারে আমার দু'টি দাত পড়ে গেছে। এখন আবার আমার বাকি জমি লিখে দিতে বলছে। আমরা তাতে রাজি না হওয়ায় ছেলে প্রায়ই আমাদের মারধর করে। কোন ভরন পোষন না দিয়ে প্রতিনিয়ত কথার ছলে নানাভাবে আমাদের নির্যাতন করে। ধারাবাহিকতায় গত ৬ অক্টোবার সকালে বাড়ীর নারিকেল সুপারি পাড়ার বিষয় নিয়ে ছেলে আমাদের সাথে ঝগড়া বিবাদ করে। এক পর্যায়ে আমাকে এলোপাথারি ভাবে কিল ঘুষি মেরে ধরে মাটিতে আছড়ে ফেলে। এতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলা ফুলা জখম হয়। পূনরায় রাতে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ী থেকে বের করে দেয়।
ওই বৃদ্ধ দম্পত্তির শাহাদাতের স্ত্রী মমতাজ বেগম অভিযোগ করেন, ছেলে মিলন কৌশলে জমি লিখে নিয়ে এখন আমাদের কাছে টাকা চাচ্ছে। অন্যাথায় বাকি জমি লিখে দিতে বলছে। বাড়ীর কোন ফসল ধরতে দেয়না। গত ৬ অক্টোবার মিলন আমার স্বামীকে বেদম মারধর করে। আমি এগিয়ে গিয়ে স্বামীকে রক্ষা করতে চাইলে আমাকেও খুব মেরেছে। ওইদিন রাতে পূনরায় আমাদের মেরে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। পরে বিষয়টি স্থানীয় মেম্বরকে জানিয়ে রাতে তার বাসায় থাকি । এখন পর্যন্ত বাসায় যাইতে পারি না। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম। এখনো কোন বিচার পাইনি।
ইউপি সদস্য মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ওই বৃদ্ধ দম্পত্তি খুবই অসহায়। আমাদের কারো কথা তার ছেলে মিলন শোনেনা। এ জন্য তাকে থানায় যেতে বলেছি।
ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মো. রুহুল আমীন বলেন, তাদের ছেলে খুবই খারাপ। জমির জন্য তাদের মারধর করে। কয়েকদিন পূর্বে তাদের বেদম মারদর করে রাতে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে। আমার কাছে তারা আসছিল। আমি তাদের থানায় যেতে বলেছি। ওই পাষন্ড ছেলের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।
নেছারাবাদ থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) বনি আমিন জানান, তারা যেন থানায় এসে আমার সাথে সরাসরি কথা বলে। আমি বিষয়টি তদন্ত করে কঠিন ব্যবস্থা নিব।