জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, আইনি ভিত্তি এবং আদেশের ব্যাপারে নিশ্চয়তা ছাড়া সনদে স্বাক্ষর করলে তা মূল্যহীন হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “সংস্কার প্রস্তাবে কিছু কিছু দলের কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। এটা থাকতেই পারে। আমাদের দাবি ছিল, নোট অব ডিসেন্ট নিয়ে গণভোট হবে। জনগণ পক্ষে ভোট দিলে জুলাই সনদ অনুমোদিত হবে। পরবর্তী সংসদে যার কনস্টিটিউট পাওয়ার থাকবে, তারা সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করবে। পুরো প্রক্রিয়ার মূল জায়গায় থাকবে অর্ডার। এই আদেশের ভিত্তিতে গণভোট হবে এবং পুরো প্রক্রিয়ায় এগোবে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্রে প্রতারণা হয়েছে। জুলাই ঘোষণাপত্রের সময় আইনি ভিত্তির দাবি ছিল, কিন্তু সেটা হয়নি। এই ঘোষণাপত্রে টেক্সট নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে। টেক্সট আগে আমাদের যেটা দেখানো হয়েছে, ঘোষণাপত্র পাঠের সময় সেটা পরিবর্তিত হয়েছিল। ঐতিহাসিক ন্যারেটিভের জায়গা থেকেও গণঅভ্যুত্থানের অনেক কিছুই আসেনি। এ নিয়ে পরবর্তী সময়ে আমরা সমালোচনা করেছি।”
ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে। ইসির জন্য আমাদের কার্যক্রম আটকে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
‘যার অর্থ নেই, এমন আরেকটি ঘটনার সাক্ষী হতে চান না। আইনি ভিত্তি এবং আদেশের ব্যাপারে নিশ্চয়তা ছাড়া সনদে স্বাক্ষর করলে তা মূল্যহীন হবে। পরবর্তীতে সরকার কীসের ভিত্তিতে আদেশ জারি করবে, কী বার্তা সেখানে থাকবে-সেই নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না’-উল্লেখ করেন নাহিদ ইসলাম।
জুলাই সনদ যাতে সফল হয়, এজন্য কিছু বিষয় সরকারের কাছে তুলে ধরেন নাহিদ ইসলাম। এগুলো হলো-
১. জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া স্বাক্ষরের আগেই প্রকাশ করতে হবে। এই আদেশ জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায় অনুসারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন।
২. সনদের ৮৪টি বিষয় একসঙ্গে গণভোটে যাবে। এতে নোট অব ডিসেন্টের আলাদা কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। গণভোটের প্রশ্ন কী হবে তা আগেই চূড়ান্তের পর প্রকাশ করতে হবে।
৩. জনগণ সনদ অনুমোদন করলে, পরবর্তীতে সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কারের জন্য সংসদকে কনস্টিটিউট পাওয়ার দেওয়া হবে। সংস্কারকৃত সংবিধান ‘২০২৬’ হিসেবে পরিচিত হবে।
তিনটি বিষয় পরিষ্কার হওয়ার পর জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হতে পারে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, সেখানে আমরাও অংশগ্রহণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করব। তবে বিষয়গুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সনদে স্বাক্ষর শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা। এতে অংশ নেওয়া না নেওয়া সমান। বরং জনগণের সামনে বিষয়গুলো স্পষ্ট না করে সনদে স্বাক্ষরের আয়োজন একটি ছলচাতুরী।
জনগণকে অন্ধকারে রাখতে চান না জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবেও জানার অধিকার রয়েছে, সরকার কীভাবে সনদ বাস্তবায়ন করবে।