কুমিল্লার হোমনায় সামান্থা (১৯) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে উপজেলার চান্দেরচর ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামের শ্বশুর বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন শনিবার লাশের ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যায় জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত সামান্থার স্বামীর নাম শিপন ও বাবার নাম মো. আব্বাস মিয়া। দুই পরিবারের বাড়ি একই গ্রামের আনুমানিক দুইশ’ মিটার দূরত্বের নয়াকান্দি এলাকায়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রায় নয় মাস আগে সামান্থার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে; বিশেষ করে প্রবাসী ভাসুরের স্ত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। এ নিয়ে প্রায়ই পারিবারিক কলহ ও ঝগড়া হতো। পরিবারের অভিযোগ, এসব ঘটনার জেরে তাকে হত্যা করে ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়।
নিহতের বাবা মো. আব্বাস মিয়া ও মা শিল্পী আক্তার বলেন, আমাদের মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।
অন্যদিকে পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের এসআই মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সামান্থার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) দিনেশ চন্দ্র দাস গুপ্ত জানান, নিহতের ঘরের দরজা বাইরে থেকে শেকল দেওয়া ছিল, তবে তা ভেতর ও বাহির দু’দিক থেকেই খোলা যায়। স্বামীসহ অন্যরা পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বলেন, ভয়ে হয়তো পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে যে কোনো তথ্য নিহতের পরিবারকে পুলিশের কাছে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় সামান্থার জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় নানা গুঞ্জন ও রহস্য দেখা দিয়েছে।