‘ধর্মতীর্থ গণহত্যা দিবস’

সরাইলে বধ্যভূমিতে উপজেলা প্রশাসনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

এফএনএস (মাহবুব খান বাবুল; সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : | প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, ০৮:৫৫ পিএম
সরাইলে বধ্যভূমিতে উপজেলা প্রশাসনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৮ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ‘ধর্মতীর্থ গণগত্যা দিবস’। ১৯৭১ সালের এই দিনে (১৮ অক্টোবর) ধর্মতীর্থ এলাকায় বর্বর পাকিস্তানি সেনা, রাজাকারসহ তাদের এ দেশীয় সহযোগীরা উপজেলার চুন্টা ও কালীকচ্ছ ইউনিয়নের শতাধিক নারী-পুরুষকে একত্র করে (যার অধিকাংশ সংখ্যালঘু) নির্যাতন করে গণহত্যা করে। এটি ধর্মতীর্থ গণগত্যা নামে পরিচিত। এই বধ্যভ’মিতে শনিবার পুষ্ফস্তবক অর্পণ করে শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কালীকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু ছায়েদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নান্নু ফকির।   

মুক্তিযোদ্ধাদের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৬ অক্টোবর মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এক দল মুক্তিযোদ্ধা মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উপজেলার কালীকচ্ছ ধর্মতীর্থ এলাকায় স্থানীয় রাজাকার প্রধান, সরাইল থানা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান মুসলীম লীগ নেতা আবদুল মন্নাফ ঠাকুর ও তাঁর দোসর বর্বর পাকিস্থানি সেনা কর্মকর্তা (ক্যাপ্টেন)  এ রহমান খানসহ কয়েকজন পাকসেনাকে হত্যা করে। কয়েকদিন পর ধর্মতীর্থ নৌকাঘাটে নাসিরনগর সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও নাসিরনগর থানা শান্তি কমিটির আহবায়ক সৈয়দ সওয়াব মিয়া চৌধুরীসহ কয়েকজন পাকসেনাকে হত্যা করে অস্ত্রশস্ত্র কেড়ে নেয় মুক্তিযোদ্ধারা। এসব ঘটনার প্রতিশোধ নিতে পাকসেনারা স্থানীয় রাজাকার খন্দকার ফয়েজ আহমেদ ওরফে সেলুর বাপ ও টাক্কাব আলীর সহায়তায় ১৮ অক্টোবর ধর্মতীর্থ নৌকাঘাটে গণহত্যা চালায়। 

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সরাইল উপজেলার সেই বধ্যভূমিটি সংরক্ষেণের জন্য সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এটি সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ নৌঘাটে অবস্থিত। এখানে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হওয়া ৪৬ জনের তালিকাযুক্ত একটি নামফলক ছিল। যাতে লেখা ছিল- ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত গণহত্যার স্মৃতি বিজড়িত স্থান। এই স্থানের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য অনুরোধ করা হইল।’

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে